কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: মানব সভ্যতার অগ্রগতিতে টাইগ্রিস নদীর ভূমিকা অর্জন করেছে অমরত্ব৷ একসময়ে টাইগ্রিস ছিল এমন একটি নদী যা পাগল পারা ছিল আপন বেগে। বর্তমানে টাইগ্রিসের অবস্থা খুবই করুণ। নদীতে জলই নেই। ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে টাইগ্রিস। এদিকে টাইগ্রিসে জল ক্রমশ কমেছে কেন তা নিয়ে ইরাক এবং তুরস্ক সরকারের মধ্যে চলেছে চাপানউতোর।
এজন্যে ইরাক সরকারের তরফে দায়ী করা হয়েছে তুরস্ক সরকারকে। টাইগ্রিস নদীর উৎসস্থল তুরস্ক। ইরাক সরকারের অভিযোগ, তুরস্ক সরকার টাইগ্রিস নদীর জল সেদেশে ধরে রাখতে বেশ কয়েকটি বাঁধ তৈরি করেছে। এর জেরে টাইগ্রিসের জল ইরাকে প্রবাহিত হচ্ছে না। ব্যাপক ক্ষতির মুখে চাষাবাদও। একই পরিস্থিতি ইউফ্রেটিস নদীর। টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেটিস নদীর তীরে বিকশিত হয়েছিল মেসোপটেমিয়া সভ্যতা। টাইগ্রিসের মতো ইউফ্রেটিসও আজ এক মৃতপ্রায় নদী। ইরাকের সরকারি সূত্রের খবর, গত এক শতাব্দীর ওপর সময়ে ইরাকে অবস্থিত টাইগ্রিসের জলস্তর গড়ে ৩৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে৷ তবে টাইগ্রিস নদীর মৃতপ্রায় পরিণতি কারণ কেবল তুরস্কই নয়, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিশ্বে জলবায়ুর যে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হচ্ছে টাইগ্রিসের এই করুণ পরিণতির জন্যে তাও দায়ী৷
বছরের পর বছর ধরে ইরাক এমনিতেই যুদ্ধবিধ্বস্ত৷ এর ফলে প্রকট হয়েছে দারিদ্র্য৷ এছাড়া লেগেই আছে খরা৷ অন্যদিকে, রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, বিশ্বের যে পাঁচটি দেশ জলবায়ুর অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ফলে তালিকার এক থেকে পাঁচের মধ্যে রয়েছে তার ভিতর অন্যতম একটি দেশ ইরাক৷একদিকে টাইগ্রিসে জল নেই, অন্যদিকে প্রতি বছর এপ্রিল থেকে তাপমাত্রা চড়চড় করে বাড়ছে। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাপিয়ে অসহনীয় পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে। এছাড়া ঘনঘন লোডশেডিং বছরভর উপদ্রব হিসেবে রয়েছে।
টাইগ্রিস নদী ইরাকের যে তিনটি শহর সংলগ্ন এলাকা দিয়ে বয়ে গিয়েছে এর মধ্যে রয়েছে মসুল, বাগদাদ এবং বসরা শহর। এই শহরগুলির বাসিন্দারাও টাইগ্রিসের করুণ পরিণতির জেরে তীব্র জলাভাবের শিকার।
তুরস্ক সরকার পরিস্থিতির জন্যে উল্টে দায়ী করেছে ইরাককেই। ইরাকে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত আলি রিজা গুনে পরিস্থিতির জন্যে ইরাককে দায়ী করে অভিযোগ করেছেন, ইরাকের নাগরিকদের জলাভাবের জন্যে দায়ী ইরাকই। কেননা মাত্রাতিরিক্ত জল খরচ করে জলের অপচয় করছেন ইরাকের নাগরিকরাই।