কলকাতা: বহুদিন ধরে রানের খরা চলছিল ভারতের এক নম্বর ক্রিকেটার বিরাট কোহলির (Virat Kohli)। তিন ফর্ম্যাটেই বহুদিন ধরে ছিল না সেঞ্চুরি। গত বছরের একেবারে শেষে সাদা বলের ফর্ম্যাটে খরা কাটিয়েছিলেন তিনি। ওয়ান ডে-তে এসেছে শতরানও। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে ‘ব্যাড প্যাচ’ কিছুতেই কাটছিল না। বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে (Border-Gavaskar Trophy) ছিল মোক্ষম সুযোগ। কিন্তু প্রথম তিন টেস্টে এমনই পিচ বানানো হয়েছিল যে তাতে রান করা ছিল দুষ্কর। আমেদাবাদে (Ahmedabad) চতুর্থ টেস্টে পিচ ছিল ব্যাটিং সহায়ক, তার সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলেন কোহলি। খেললেন ১৮৬ রানের অনবদ্য ইনিংস। ধৈর্য না হারালে ডাবল সেঞ্চুরিও নিশ্চিত ছিল।
এই নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭৫টি শতরান হয়ে গেল কোহলির। তাঁর সামনে এখন শুধু একজনই— ভারতীয় ক্রিকেটের ঈশ্বর শচীন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar)। কে না জানে, ১০০টি আন্তর্জাতিক ১০০ আছে তাঁর ঝুলিতে। তিন নম্বরে স্থানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার (Australia) প্রাক্তন অধিনায়ক তথা কিংবদন্তি ব্যাটার রিকি পন্টিং (Ricky Ponting), তিনি করেছিলেন ৭১টি সেঞ্চুরি।
আরও পড়ুন: Talk on Facts | Biriyani | বিরিয়ানির হাঁড়িতে কেন লাল কাপড় জড়ানো থাকে?
আরও একটি পরিসংখ্যানেও শচীনের পিছনে দুই নম্বরে এসে উঠেছেন কোহলি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি আন্তর্জাতিক শতরান এখনও লিটল মাস্টারের। অজিদের বিরুদ্ধে ২০টি সেঞ্চুরি আছে তাঁর। আমেদাবাদ টেস্টের পর কোহলির সেঞ্চুরির সংখ্যা ১৬। তিন নম্বরে ১২টি সেঞ্চুরি করে ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা (Brian Lara)।
টেস্ট কেরিয়ারে এই নিয়ে ২৮টি সেঞ্চুরি করলেন কিং কোহলি। ১১০ টেস্টে তাঁর মোট রানসংখ্যা ৮৪১৬। গড় ৪৮-এর বেশি। এটা ঠিক, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে কোহলির দাপট অনেক বেশি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ২৭১টি ম্যাচে মোট ১২৮০৯ রান করেছেন তিনি। গড় ৫৭.৭। সেঞ্চুরির সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৪৬। শচীনের ৪৯টি সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙা কোহলির জন্য সময়ের অপেক্ষা। ১৭ মার্চ শুরু হওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের একদিনের সিরিজে তাঁর ব্যাটে সেঞ্চুরি দেখার অপেক্ষায় গোটা দেশ।
এ তো গেল পরিসংখ্যানের কথা। আলোচনা করা যাক আমেদাবাদ টেস্টে কোহলির ১৮৬ রানের ইনিংস নিয়ে। ঠিক কোহলিসুলভ ইনিংস বলা যাবে না। কোহলি শর্ট নিতে ওস্তাদ ঠিকই, কিন্তু তাঁর ইনিংসের অনেকটা ইনিংস জুড়ে বাউন্ডারি থাকে। কিন্তু আমেদাবাদে তিনি যখন শতরান পূর্ণ করেন তখন তাঁর বাউন্ডারির সংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচ। অর্থাৎ ৮০ রান দৌড়ে নিয়েছিলেন কোহলি। আমেদাবাদে চূড়ান্ত মনোঃসংযোগ দেখিয়েছেন, উল্টোপাল্টা শট মারার পথে যাননি। সেঞ্চুরি করে স্বভাবসিদ্ধ আগ্রাসী সেলিব্রেশনও করেননি কোহলি। বোঝাই গিয়েছে, এই ইনিংস তাঁকে কতটা স্বস্তি দিয়েছে।