Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
Fourth Pillar: সারভাইভাল অফ দ্য রিচেস্ট
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  কৃশানু ঘোষ
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৩, ১০:৩০:০০ পিএম
  • / ১৪৭ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • কৃশানু ঘোষ

ডারউইন বলেছিলেন, সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট। সক্ষমতম প্রজাতিই বেঁচে থাকে, বিবর্তিত হয়, কিন্তু টিকে যায়। যারা সক্ষম নয়, যারা পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি, তারা উবে গেছে, এক্সটিঙ্কট হয়ে গেছে। যেমন? যেমন কয়েক লক্ষ বছর আগেই ডাইনোসরাসের যাবতীয় প্রজাতি উবে গেছে, তারা এখন ফসিল, তারা এখন শিশুপাঠ্য বা হাড়হিম করা সিনেমা। আবার ১৬৬২ সালেও যে ডোডো পাখিদের দু’ একটা দেখা যেত, তাদের একজনও বেঁচে নেই, তারাও পৃথিবী থেকে মুছে গেছে। ডারউইন একেই বলেছিলেন সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট। এই ফিটেস্ট কারা? যারা নিজেদের খাদ্য আহরণে সক্ষম, নিজেদের বংশবৃদ্ধিতে সক্ষম, নিজেদের প্রতিরক্ষা করতে সক্ষম। ডারউইন এদেরকেই ফিটেস্ট বলেছেন, সেই ফিটেস্টরা বেঁচে রয়েছে। কিন্তু একটা বড়সড় তালিকা এখনও আছে, যারা তেমন সক্ষম নয়, এদেরকে সংরক্ষণ না করা হলে, এরাও উবে যাবে, এদেরকে আপাতত পৃথিবীর মানুষ এনডেনজারড স্পিসিস-এর তালিকায় ঝুলিয়ে রেখেছে। বছর পাঁচ, বছর দশ পরে পরে এদের কেউ কেউ উবে যাচ্ছে, উবে যাবে। প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু মানুষ? মানুষ পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক, শারীরিক কারণে তার উবে যাবার কোনও কারণই নেই। বিজ্ঞানের বহু আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে তার আয়ু বেড়েছে, খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে, বাসস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। কাজেই যে বিশাল সম্পদ মানুষের কাছে আছে, কেবলমাত্র তার সুষ্ঠু ব্যবহার করলেই মানুষের উবে যাবার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু প্রশ্ন ঠিক এইখানটাতেই, ওই যে বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদ, যা কারও একলার ছিল না, বানর থেকে মানুষের বিবর্তনের পরেও যে সম্পদ ছিল সব্বার, সেই সম্পদ কিছু মানুষ কুক্ষিগত করতে শুরু করল। অঢেল জল জমি জঙ্গলের ওপর কিছু ব্যক্তির মালিকানা সমাজে শ্রেণি বিভাজন আনল। সেই থেকে কিছু মানুষ বসে খায়, কিছু মানুষ খেটে খায়। এই বসে খাওয়া মানুষের চারধারে থাকে কিছু বুদ্ধিমান মানুষ, কিছু শক্তিমান মানুষ, কিছু ছকবাজ মানুষ, কিছু কূটকৌশলে, ছলাকলায় রপ্ত মানুষ। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাড়তে থাকে কুক্ষিগত হওয়া সম্পদ। সে সম্রাট অশোকই বলুন আর সম্রাট আওরঙ্গজেব, একলা একলাই তো সাম্রাজ্য বাড়িয়ে নেননি, সঙ্গে মন্ত্রী ছিল, সান্ত্রী ছিল, পরামর্শদাতারা ছিল, ছিল মাইনে পাওয়া সৈনিক। রাজার ছেলে রাজা হয়েছে, পুরোহিতের ছেলে পুরোহিত, মুচির ছেলে মুচিই হয়েছে, নাপিতের ছেলে নাপিত হয়েছে, কৃষকের ছেলে লাঙ্গল ধরেছে। কখনও সখনও এর ব্যত্যয় ঘটেনি? ঘটেছে, কিন্তু এক্সসেপশন প্রুভস দ্য রুল ওনলি। এই মধ্যযুগ থেকেই বিষয়টা খুব দ্রুত বদলাতে থাকল। কলকারাখানা এল, পুঁজি এল, শ্রমিক নামের এক নতুন শ্রেণি তৈরি হল। কারখানা শ্রমিক কোথা থেকে এল তা তো আমরা জানি। জেমস ওয়াট বাষ্পচালিত ইঞ্জিন আবিষ্কার করলেন, কিন্তু তাকে কিনে এনে উৎপাদন বাড়ানোর যে কারখানা, তার পুঁজি এল কোত্থেকে? হাতে লোটা নিয়ে জামসেদপুরে গেলেই তো ইস্পাত কারখানা গড়ে তোলা যায় না। প্রথম পুঁজি এল জমি বেচে, জমিদারি বেচে, দ্বিতীয় পুঁজি এল বেনিয়াদের সঞ্চয় থেকে। বহু পরে পরবর্তী স্তরের পুঁজি এল মানুষ ঠকিয়ে, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানকে ঠকিয়ে। যারা লেঠেল দিয়ে, সৈনিক দিয়ে জমি লুটেছিল, যারা তাদেরই সাহায্য নিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে মাল নিয়ে কেনা বেচা করে পয়সা কামাল আর যারা ধূর্ত, ঠকবাজ তাদের পুঁজিতেই বেড়ে উঠল অর্থনীতি। তারা তখন সব দুধে ধোওয়া দেবশিশু। নিজের পয়সা কাজে লাগিয়ে, বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে কী বিশাল বড়লোক হয়েছে, এটাই প্রচার, তাদের নতুন নাম আন্ত্রেপেনিওর। হ্যাঁ, বিবর্তনের ইতিহাসে একমাত্র মানুষই এই কাজ করেছে, দুনিয়ার সম্পদকে কুক্ষিগত করেছে। পাখিরা করেনি, মাছেরা করেনি, কীটপতঙ্গেরা করেনি, মানুষ করেছে। সেই সম্পদ কুক্ষিগত হতে হতে আজ এক নতুন তত্ত্বের জন্ম দিয়েছে, সারভাইভাল অফ দ্য ফিটেস্ট নয়, সারভাইভাল অফ দ্য রিচেস্ট। বেঁচে থাকবে কেবল বড়লোকেরা, তারা যাদের হাতে আছে অঢেল অর্থ, অঢেল সম্পদ। প্রাকৃতিক সম্পদের নির্লজ্জ ব্যবহারের পরে এখন নিশ্বাস নেবার অক্সিজেনও পণ্য। তাই যাদের হাতে থাকবে সেই অক্সিজেন কেনার ক্ষমতা, পরিস্রুত পানীয় জল কেনার ক্ষমতা, যাদের হাতে থাকবে ক্রমশ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে যেতে থাকা স্বাস্থব্যবস্থার চাবিকাঠি, যাদের হাতে থাকবে দামি, আরও দামি হতে থাকা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ জোগানোর রেস্ত, তারাই বেঁচে থাকবে। বাকিরা ধুঁকবে, কেউ কেউ মইয়ে চড়ে উপরতলার বাসিন্দা হতে চাইবে। দু’ একজন পারবে, তাদের এই পারাটাই গণতন্ত্রের জয় বলে চিহ্নিত হবে, কিন্তু ঠিক সেই সময়ের মধ্যেই উবে যাবে বহু জনজাতি, বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতি। সারভাইভাল অফ দ্য রিচেস্ট। সেটা এবছরের অক্সফ্যাম রিপোর্ট আবার মনে করিয়ে দিল। আগেই বলেছি অক্সফ্যাম হল এক সংস্থা যারা পৃথিবীর দেশে দেশে সমীক্ষা করে দারিদ্রের। আজ থেকে নয় ১৯৪২-এ যুদ্ধের মাঝখানেই গ্রিসের দুর্ভিক্ষে সাহায্য করতে অক্সফোর্ড ইউনিভারসিটির কিছু অধাপক, কিছু বিশিষ্ট মানুষ মিলে এই কাজ শুরু করেন, আজও তাঁদের সমীক্ষা দেশে দেশে চলে, তাঁরা এই দারিদ্র কমানোর কথা বলেন, বৈষম্যকে কমানোর কথা বলেন। ফেমিন, দুর্ভিক্ষের সময় গড়ে ওঠা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এই সংগঠনই আজকের অক্সফ্যাম। তাদের এই বছরের রিপোর্ট আমাদের হাতে। তাতে আমাদের দেশের আর্থিক বৈষম্যের কথাও উঠে এসেছে এবং তা ভয়ঙ্কর। রিপোর্ট বলছে, আমাদের দেশের ১ শতাংশ মানুষ, দেশের ৪১ শতাংশ সম্পদের মালিক। আর ঠিক উল্টোদিকে সবথেকে গরিবের দিক থেকে, তলার দিক থেকে ৫০ শতাংশ মানুষের কাছে আছে মাত্র ৩ শতাংশ সম্পদ। কিন্তু এরাই, মানে এই ৫০ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে আদায় হয় ৬৪ শতাংশ জিএসটি। দেশের ১০ শতাংশ ধনীদের কাছ থেকে আদায় হয় মাত্র ৪ শতাংশ জিএসটি। মানে কী দাঁড়াল? ওই ৫০ শতাংশ মানুষের কাছ থেকে আদায় হওয়া ৬৪ শতাংশ জিএসটির টাকায় ফ্লাইওভার হবে, বুলেট ট্রেন ছুটবে, সেখানেই সব থেকে প্রাইভেট কার চলবে, সবথেকে বেশি বড়লোকেরা চড়বে। উন্নয়ন হবে গরিবের পয়সায়, সেই ফোর জি, ফাইভ জি, ১২ লেনের রাস্তা, ফ্লাইওভার ব্যবহার করবে বড়লোকেরা। এই ২০২২ সালে দেশের সবথেকে বড়লোকের প্রথম ১০০ জনের কাছে আছে ৫৪.১২ লক্ষ কোটি টাকা। প্রথম ১০ জনের কাছে আছে ২৭.৫২ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২১-এর তুলনায়, ২০২২-এ এদের সম্পদ বেড়েছে কত? ৩২.৮ শতাংশ। গৌতম আদানির একলারই সম্পদ বেড়েছে ৪৬ শতাংশ । ৩০ শতাংশ ভারতীয়দের কাছে আছে ৯০ শতাংশের বেশি সম্পদ। মানে খুব পরিষ্কার, এই ৩০ শতাংশ বাঁচুক, তলায় জোরদার কম্পিটিশন চলুক, কিন্তু বেঁচে থাকুক। এরা বাঁচলেই বাজারে বিক্রি হতে থাকবে ফ্রিজ, টিভি, ওভেন, এরাই যাবে উচ্চশিক্ষায়, এরাই পাবে চিকিৎসার সুযোগ। বাকিরা? ওই যে ডোডো পাখি, উবে যাবে। ২০২০তে আমাদের দেশের বিলিয়নেয়ারের সংখ্যা ছিল ১০৬, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৬। তার মানে ক্রমশ সম্পদ আরও কুক্ষিগত হচ্ছে, বৈষম্য আরও বাড়ছে। এই বড়লোকেরদের কাছ থেকে ট্যাক্স নিয়ে কিছুটা বৈষম্য কমানো যেত, তা না করে আজকের সরকার এই করোনার মধ্যে কর্পোরেট ট্যাক্স ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২ শতাংশ করেছে, রাজস্বখাতে আয় কমেছিল ১ লক্ষ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। এই রিপোর্টই বলছে ২০১৭-২০২২ এ গৌতম আদানির অবিকৃত উৎপাদনের ওপর কেবল এককালীন কর বসালেই সরকার পেত ১ লক্ষ ৭৯ হাজার কোটি টাকা।  এ দিয়ে সারা দেশের ৫০ লক্ষের বেশি প্রাথমিক শিক্ষকদের ১ বছরের মাইনে দেওয়া যেত। দেশের ১৬৬ জন বিলিওনিয়ারের ওপর কেবল ২ শতাংশ অতিরিক্ত ট্যাক্স বসালে পাওয়া যাবে ৪০ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা, তিন বছর অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের খাবার দেওয়া যাবে। সবথেকে ধনী ওই ১০ জনের আয়ের ওপর যদি ৫ শতাংশ ট্যাক্স বসানো যায়, তাহলে সরকার পাবে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার কোটি টাকা যার পরিমাণ কেন্দ্রে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক আর আয়ুশ মন্ত্রকের বাজেটের দেড় গুণ। কিন্তু সরকার তা করছে না, তা করবেও না। কারণ এই সরকার ওই ফড়ে পুঁজিপতিদের সরকার, এই সরকার আদাদি আম্বানিদের সরকার, গরিব আম জনতার জন্য এনাদের গাজর হল ওই রাম মন্দির, কাশী মথুরা, ব্যস। এবং প্রায় নিশ্চিহ্ন হবার দোরগোড়ায় বসে থাকা দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের পিঠ ঠেকে গেছে দেওয়ালে, তাদের কাছে দুটো অপশন, এক তারা ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, নয় তারা রুখে দাঁড়াবে।                

 

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪২৫ ২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

কলকাতার পারদ উঠল ৪১.৬ ডিগ্রিতে
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
ম্যাচ ফিক্সিংয়ের মতো বিজেপি কোর্ট ফিক্সিং করেছে, দাবি অভিষেকের
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
রাহুল গান্ধীর ‘অপমানের’ জবাব দিলেন নরেন্দ্র মোদি
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
তমলুকের সভায় শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর, বাদ গেলেন না অভিজিতও
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
শিক্ষা দুর্নীতির দায় পার্থর ঘাড়ে চাপালেন কুণাল
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে চায় বিজেপি, অভিযোগ মমতার
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
অস্থায়ী কর্মীদের দিয়ে ভোট করানোর বিরোধিতায় কমিশনে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
এখনই বার্সা ছাড়ছেন না জাভি, থাকবেন কতদিন?
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে আদালত এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছে না
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
রোজভ্যালির চার্জশিটে শ্রেয়া পাণ্ডের নাম
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদান ভাটপাড়া কাউন্সিলরের
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
কাঞ্চনকে প্রচার গাড়ি থেকে নামিয়ে দিলেন কল্যাণ
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
রাজ্য জয়েন্ট পরীক্ষার দিন বিশেষ মেট্রো পরিষেবা কলকাতায়
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
নির্বাচনী বিধি ভেঙেছেন মোদি-রাহুল, কৈফিয়ত চাইল কমিশন  
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
২টি বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ গেল ৩ যুবকের
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team