নয়া দিল্লি : পেগাসাস-কাণ্ডে তদন্তের সম্মতি দিল সুপ্রিম কোর্ট। স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে ভারতীয়দের উপর নজরদারি করা হয়েছে কি না, তা জানতে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। কমিটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।
এই বছরের জুলাই মাসেই সামনে আসে পেগাসাস তত্ত্ব। দাবি করা হয়, পেগাসাস নামে এক ইজরায়েলি স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাংবাদিকদের উপর। বিরোধীরা এই বিষয়ে তদন্তের দাবিতে সোচ্চার হয়। এরপর পেগাসাস নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে।
কেন্দ্রের তরফে বিষয়টি অস্বীকার করা হলেও সুপ্রিম কোর্ট দেশের নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তার কথা মাথায় রেখেই গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। জানা গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের গঠিত এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রন। আইপিএস অফিসার অলোক জোশী তদন্তে সহায়তা করবেন। তিনজন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞকেও নিযুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন : আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্জি মেনে নিল হাইকোর্ট, দুপুর দুটোয় জরুরি ভিত্তিতে শুনানি
শুনানির শুরুতেই সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়েছে, কেন্দ্রকে নোটিস দিয়েছি। কেন্দ্রের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা জানাতে একাধিক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই সীমিত তথ্যের হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে। যা স্বচ্ছ ধারনা তৈরিতে কোনও সহায়তা করে না। ব্যক্তি-গোপনীয়তার অধিকার রক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, ‘কোনও ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকারে হস্তক্ষেপ করা যায় না। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট নীরব দর্শক হয়ে থাকবে না। জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে সরকার যা খুশি করতে পারে না।’
সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টতই বলেছে, গণতন্ত্রে নাগরিকের উপর নজরদারির কোনও জায়গা থাকতে পারে না। এতে বক্তব্যের স্বাধীনতায় আঘাত তো লাগেই, গণতন্ত্রের প্রধান স্তম্ভ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও খর্ব হয়। সুপ্রিম কোর্ট মনে করছে, পেগাসাসের অভিযোগে ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকারের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ রয়েছে কোনও বিদেশী সংস্থার যুক্ত থাকারও। জনস্বার্থেই এই বিষয়গুলি নিয়ে স্বাধীন তদন্ত হওয়া জরুরি।