রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়(Partha Chatterjee) এবং মধ্য শিক্ষা পর্ষদের (West Bengal Council of Higher Secondary Education ) অপসারিত সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে(Kalyanmoy Ganguly) শুক্রবার একই আদালতে তোলা হয়। আলিপুরে সিবিআইয়ের(CBI) বিশেষ আদালতে নিয়ে আসা হয় তাঁদের। দু’জনকেই হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই। এমনটাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর। পার্থকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য সিবিআই আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে আবেদন করে বৃহস্পতিবার। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে শুক্রবার পার্থকে আলিপুরে হাজির করানোর নির্দেশ দেয়। সেইমতো প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে আলিপুরে আনা হয়। আবার নিজাম প্যালেস থেকে আলিপুরে সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয় কল্যাণময়কে। এজলাসে দুজনকে ঝুঁকে পড়ে কথা বলতে দেখা গিয়েছে।
গত বুধবার জেল থেকে ভার্চুয়াল শুনানিতে অংশ নেন পার্থ। তিনি হাউহাউ করে কেঁদে বিচারকের কাছে আর্জি জানান, তাঁকে যেন শান্তিতে বাঁচতে দেওয়া হয়। পার্থ বিচারককে বলেন, যে কোনও শর্তে আমাকে জামিন দিন। আদালতের সমস্ত নির্দেশ এবং শর্ত আমি মেনে চলব। প্লিজ, আমাকে বাঁচতে দিন। পার্থর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ও(Arpita Mukherjee) ভার্চুয়াল শুনানিতে(virtual hearing) কেঁদে ভাসান। আদালত দুজনকেই ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।
এদিকে দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিবিআই গ্রেফতার করে মধ্য শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি(former president of WBCHSE) কল্যাণময়কে। সিবিআই এবং ইডির অভিযোগ, তিনি মোটেই তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। বহু প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যাচ্ছেন। নিজাম প্যালেসে তাঁকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ চলে। পরে সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের কমিটি(Retd Justice Ranjit Kumar Bag’s committee) আগেই কল্যাণময়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার সুপারিশ করেছিল।
আরও পড়ুন: অন্যায়ভাবে ১৬ মাসে ৩২ লক্ষ টাকা বেতন নিয়েছেন এসএসসি কাণ্ডে ধৃত কল্যাণময়
গত ২০ মে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করে সিবিআই। পরে বেশ কয়েকবার তাঁর বাড়িতে এবং অফিসে তল্লাশি চালায় সিবিআই। বর্তমানে সিবিআই হেফাজত থাকা স্কুল সার্ভিস কমিশনের উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিনহা এবং কল্যাণময় নিয়োগ দুর্নীতির দুই প্রধান মাথা বলে সিবিআইয়ের দাবি। একই কথা বলেছে বাগ কমিটিও। শান্তিপ্রসাদ দলবল নিয়ে ভুয়ো সুপারিশপত্র তৈরি করতেন। তার ভিত্তিতে কল্যাণময় ভুয়ো নিয়োগপত্র দিতেন, এমনটাই অভিযোগ তদন্তকারী সংস্থার। তাদের আরও অভিযোগ, গোটা প্রক্রিয়া চলত পার্থর জ্ঞাতসারেই।