কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, সকালে এ খবর জানা মাত্রই ‘গো গোতা গো’ আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের কার্যালয়ের কাছে জড়ো হতে শুরু করেন। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিস লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না-করলে তাঁরা শেষ দেখে ছাড়বেন। এমনকী তাঁরা জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার দাবিও তুলেছেন। সেই ভয়ে শ্রীলঙ্কার জাতীয় টিভি অফিস রূপবাহিনী কর্পোরেশনের সামনে মঙ্গলবার থেকেই সেনাবাহিনী মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। তবে, যে কোনও মুহূর্তে আন্দোলনকারীরা আরও মারমুখী হয়ে উঠতে পারেন বলে সংবাদ সংস্থাগুলির অনুমান।
বুধবার ভোররাতের আগেই লঙ্কা ছেড়ে মালদ্বীপে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২০ জুলাই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে। পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এখনও গোতাবায়ার কাছ থেকে ইস্তফাপত্র বা কোনও বার্তা পাননি। দেশের সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে কার্যকরী প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ চালাবেন। যদিও বুধবার যে কোনও সময় তিনিও পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে স্পিকারকেই সেই দায়িত্ব নিতে হবে। আগামী শুক্রবার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন বসবে এবং তার ৫ দিন পর নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে।
আরও পড়ুন: Sri Lanka Crisis: শ্রীলঙ্কা ছেড়ে সস্ত্রীক মালদ্বীপে পালালেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া
ভারত সরকার তাঁকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেবে না, জানিয়ে দেওয়ার পরই আরও অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন দ্বীপরাষ্ট্র-প্রধান। শেষপর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বিমানবাহিনীর বিমানে মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে পৌঁছে যান গোতাবায়া। তাঁর সঙ্গেই পালিয়ে গিয়েছেন স্ত্রী আয়োমা এবং মাত্র ২ জন দেহরক্ষী। অভিবাসন দফতরের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এই খবর জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্টের পূর্ব প্রতিশ্রুতিমতো বুধবারই তাঁর পদত্যাগের কথা ছিল। কিন্তু, পদত্যাগের পর নিজের ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি ভারতের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন। কিন্তু, ভারত তৎক্ষণাৎ তা নাকচ করে দেওয়ায় আর ঝুঁকি নিতে চাননি গোতাবায়া। বুধবার শেষরাতের মধ্যেই আশ্রয় নিয়েছেন আর এক দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপে।
এদিকে, গোতাবায়াকে ভারত আশ্রয় না-দিলেও তাঁকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু, এদিন সকালেই কলম্বোস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এই ধরনের খবর আদ্যন্ত ভিত্তিহীন ও অনুমান নির্ভর। একইসঙ্গে ভারতীয় দূতাবাস শ্রীলঙ্কাবাসীকে এই বলে আশ্বস্ত করেছে যে, ভারত তাদের পাশে আছে।