কলকাতা: ২৯-শে জুলাই। দুপুরের সবুজ-মেরুন তাঁবু প্রতিবারের মতো এবারও সুসজ্জিত। একটা দৃশ্য দেখলে মনে হবে না সময়টা ২০২৩। মনে হবে ৭০ দশকের কোনও একটা সময়। প্রিয় বাবলু-কে ঘিরে রয়েছে এক ঝাঁক সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা। দেখে মনে হবে যেন কিছুক্ষণ বাদেই বড় ম্যাচে নামতে চলেছেন সুব্রত ভট্টাচার্য। এখনও তাঁর কাঁধে গুরুদায়িত্ব সেরা ফরোয়ার্ডদের আটকানোর। বোঝার উপায় নেই দেখে তিনি তাঁর জীবনের সাতটি দশক ইতিমধ্যেই পেরিয়ে এসেছেন। তাঁকে ঘিরে মোহনবাগান তাঁবুতে অকৃত্রিম উন্মাদনা আজও যেন অটুট!
সুব্রত ভট্টাচার্যের বিতর্কিত আত্মজীবনী-‘ষোলো আনা বাবলু’-যে মঞ্চে প্রকাশিত হল, সেই মঞ্চেই এক কোনায় বসেছিলেন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য। সুব্রত বনাম মনোরঞ্জন- এই দ্বৈরথ একসময় লোকগাঁথা হয়ে গিয়েছিল। পরনে ডিপ গ্রিনের এক টি-শার্ট। একসময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী সুব্রতকে ভট্টাচার্যকে প্রকৃত মর্যাদা দিতে তিনি একেবারে যেন প্রস্তুত। মঞ্চে আওড়ালেন সুব্রত-স্তুতি। উল্লেখ্য, তাঁর একসময়ের প্রতিদ্বন্দ্বীর আত্মজীবনীর ভূমিকা লিখেছেন স্বয়ং মনোরঞ্জন! অনতিদূরেই বসেছিলেন ভারত অধিনায়ক তথা তাঁর জামাই সুনীল ছেত্রী। বললেন, শ্বশুরের থেকে কোচ সুব্রত ভট্টাচার্যকেই এগিয়ে রাখবেন। ফুটবল শুধু খেলতে নয়, কীভাবে সাধনা করতে হয় শিখিয়েছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্যই।
আরও পড়ুন: Harmanpreet Kaur | হরমনপ্রীতের আচরণে ক্ষুব্ধ বিসিসিআই! বিনি-লক্ষ্মণের প্রশ্নে মুখ পড়বেন অধিনায়ক
মোহনবাগানের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্যকে সম্মান জানাতে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার। তাঁকে লাল-হলুদ উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জানালেন এবং একইসঙ্গে তুলে দেওয়া হল বিশেষ স্মারক। সুব্রত ভট্টাচার্যকে কেন্দ্র করে কোথাও যেন এক বিন্দুতে মিলিত হল ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব। এইসব দেখে আপ্লুত আজকের দিনের প্রোটাগনিস্ট স্বয়ং সুব্রত। অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চ থেকে বেরনোর সময়েও একইরকম উন্মাদনা। সেই চেনা ‘বাবলু দা- বাবলু দা’ স্লোগান! কে বলবে সময়টা ২০২৩… মনে হবে ৭০ দশকের কোনও পড়ন্ত বিকেলে সবুজ-মেরুন তাঁবুতে সবার প্রিয় বাবলু-দাকে ঘিরে এহেন উন্মাদনা!