কলকাতা: কবে মিলবে হকের চাকরি, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও অধরা। এসএলএসটি নবম ও দশমের চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন (SLST Job Seekers Protest) শনিবার হাজার দিনে পড়ল। ৫৫৭৮ জন চাকরিপ্রার্থী খোলা আকাশের নীচে কখনও রোদে পুড়ে, কখনও বৃষ্টিতে ভিজে, শীতকে উপেক্ষা করে ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে চাকরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। পুজো পার্বণ, উৎসবের দিনগুলোতেও গান্ধী মূর্তির পাদদেশ ছেড়ে যাননি তাঁরা।
এদিন ধরনা মঞ্চে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের অনেকে মাথা কামিয়ে (SLST Woman Candidate Shaves Head ) ফেলেন চাকরি না পাওয়ার হতাশায়। অনেকে আবার খালি গায়ে বিক্ষোক্ভে শামিল হন। তাঁদের অভিযোগ, ২০১৬ সালে রাজ্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছেন তাঁরা। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতির জেরে চাকরি চুরি হয়ে গিয়েছে। ২০১৯ সালে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে প্রথম তাঁরা ধরনায় বসেন। ২৯দিন সেই ধরনা চলে। তারপর ততকালীন শিক্ষামন্ত্রী বর্তমানে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আচমকাই একদিন ধরনাস্থলে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আশ্বাস দিলে ওই ধরনা তুলে নেন চাকরিপ্রার্থীরা। পরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তারপরেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
এদিন বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেকে মাথা মুড়িয়ে ফেলেন। তাঁদের মধ্যে মহিলাও রয়েছেন। অনেক পুরুষ চাকরিপ্রার্থী খালি গায়ে বিক্ষোভ দেখান। কাউকে কাউকে কাঁদতে দেখা যায়। শাসক এবং বিরোধীদের কাছে আন্দোলনকারী এক মহিলার কাতর আবেদন, কেউ শুনতে পাচ্ছেন? রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আপনারা সবাই আমাদের সমস্যার সমাধান করুন। আমাদের চাকরি দিন। এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আপনি উত্তরবঙ্গে রয়েছেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। আমাদের এই আন্দোলন যদি দেখে থাকেন আগামিকালই আমাদের ধরনা মঞ্চে আসুন। আমাদের নিয়োগ দিতেই হবে আপনাকে।
আরও পড়ুন: শিক্ষাগত যোগ্যতা ঘোষণায় ভুলের জন্য নির্বাচন বাতিল করা যায় না, মামলা খারিজ
কলকাতা পুলিশের অনুমতিক্রমে প্রত্যেকদিন ৩০ জন চাকরিপ্রার্থী সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অনশন বসছেন। বিচার চেয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ইতিমধ্যেই নিজেদের পিটিশন জমা দিয়েছেন। ২০২২ সালের শুরুতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ইতিমধ্যে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন। প্রায় ১০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে তদন্তকারী সংস্থা। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিক, প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য, তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে গ্রেফতার হয়েছেন।
আরও অন্য খবর দেখুন