কোনওদিন দুর্নীতিতে প্রশ্রয় দিতেন না সিদ্ধার্থশংকর রায়। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মৃতিচারণ করে এমনই মন্তব্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। নিজেরই মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় গঠন করেছিলেন তদন্ত কমিশন। সেই ওয়াংচু কমিশনের তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-বিধায়ককে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয়েছিল।
আর যার জেরে সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ বেশ কয়েকজন সদস্যের আপত্তিতে এই কমিশন গঠনের কাজ মাঝপথে কার্যত স্থগিত রাখতে হয়। ১৯৫৭ সালে পশ্চিমবঙ্গে ডা.বিধান চন্দ্র রায়ের মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। অশোক কুমার সেনের হাত ধরে তিনি রাজনীতিতে এসেছিলেন। এরপর ১৯৬০ সালে তিনি প্রথমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছিলেন।
১৯৭১ সালে তিনি ভারতের শিক্ষা ও যুব কল্যাণমন্ত্রী হয়েছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তাকে পশ্চিমবঙ্গ বিষয়ক বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়। তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গড়তে তাকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় পাঠান। সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় ৭২ থেকে ৭৭ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
আজকের পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তাই অধ্যক্ষ হিসাবে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যের বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একসময় আমেরিকায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে থাকা সিদ্ধার্থশংকর রাজ্যের বিরোধী দল নেতা হিসাবেও বামফ্রন্ট সরকারকে যথেষ্ট ব্যাতিব্যাস্ত করে তুলেছিলেন বিধানসভায়। সেই বিধানসভার অধ্যক্ষের বৃহস্পতিবারের বক্তব্যটি যথেষ্ট তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।