মুম্বই: এনসিপি (NCP) প্রধান শরদ পাওয়ার (Sharad Pawar) তাঁর ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে ফিরিয়ে নিলেন। শুক্রবার বিকেলে পাওয়ার বলেন, দলের ভাবাবেগ এবং ভালোবাসার কথা মাথায় রেখে আমি পদত্যাগ করছি না। সভাপতি পদে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিলাম। এদিনই সকালে শোকের শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেন, পাওয়ারের ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছেকে দল মানবে না। তিনি সভাপতি পদে থাকবেন। গত মঙ্গলবার তাঁর আত্মজীবনীর দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের অনুষ্ঠানে আচমকাই পাওয়ার ঘোষণা করেন, তিনি এনসিপি সভাপতি পদে ইস্তফা দেবেন। ওই পদে আর তিনি থাকতে চান না।
আরও পড়ুন: Ramakrishna Mission | রামকৃষ্ণ মিশনের নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সূচনা
এদিন দলের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসেন। বৈঠকের পর এনসিপির-সহ সভাপতি প্রফুল্ল প্যাটেল বলেন, শরদ পাওয়ার দলের সভাপতি পদে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। আমরা তাঁর ওই ইচ্ছেকে প্রত্যাখ্যান করছি। আজকের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আমরা তাঁকে সভাপতি হিসেবে কাজ করে যেতে অনুরোধ করছি। প্রফুল্লর এই কথার পরেই বিকেলে মারাঠা স্ট্রংম্যান শরদ পাওয়ার তাঁর ইস্তফার ইচ্ছে প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেন। এর ফলে গত চারদিন ধরে মহারাষ্ট্রে চলা এনসিপির নাটকের অবসান হল।
মহারাষ্ট্রের রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মঙ্গলবার বলেছিল, এটা শরদ পাওয়ারের রাজনৈতিক চাল। তিনি কিছুতেই এনসিপির সভাপতির পদ ছাড়বেন না। আসলে এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ ইস্তফা দেওয়ার কথা বলে জল মাপতে চেয়েছিলেন। তিনি ভালোই জানতেন, দল তাঁকে ছাড়বে না। আজ হোক, কাল হোক, দল তাঁকে অনুরোধ করবেই ইস্তফা না দেওয়ার ব্যাপারে। তারপর তিনি বলবেন, দলের ইচ্ছেকে মর্যাদা দিতেই ইস্তফা দেবেন না।
শুক্রবার ঠিক সেটাই হল। বস্তুত, মঙ্গলবারই পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার বলেছিলেন, দিন তিনেক অপেক্ষা করুন। তারপর দেখুন, কী হয়। তিনি তিনদিন সময় চেয়েছেন বিষয়টি নিয়ে ভাবার জন্য। বাস্তবে ঠিক সেটাই ঘটল। তার মধ্যে এনসিপির অন্দরে গত তিন-চারদিনে নানা নাটক চলল। দলের সমর্থকরা শরদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁর সমর্থনে। কেউ কান্নায় ভেঙে পড়লেন। কোনও অতিভক্ত আবার রক্ত দিয়ে নিজের শরীরে শরদের নাম লিখলেন। এনসিপিতে চর্চা চলল, মেয়ে সুপ্রিয়া সুলেকে পরবর্তী জাতীয় সভাপতি করা হবে। অজিতকে মহারাষ্ট্রের দায়িত্ব দেওয়া হবে। দলের শীর্ষ নেতারা শরদের বাড়িতে গিয়ে ধরনা দিলেন, তিনি যেন কিছুতেই সভাপতির পদ না ছাড়েন।
বেশ কিছুদিন ধরে জল্পনা চলছিল, অজিত পাওয়ার এনসিপি বিধায়কদের অনেককে ভাঙিয়ে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়বেন। তিনিই হবেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী।