মুম্বই: পুরনো পেনশন পদ্ধতি ফেরানোর দাবিতে মহারাষ্ট্রে (Maharastra) অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটে নেমেছেন প্রায় ১৭ লক্ষ সরকারি কর্মচারী। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে বিজেপি (BJP) এবং শিবসেনা (Shivsena) (শিন্ডে গোষ্ঠী) জোট সরকারের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ চরম পর্যায় পৌঁছেছে।মঙ্গলবার থেকে সরকারের কর্মচারীদের প্রায় ১৫টি সংগঠন যৌথভাবে ধর্মঘটে নেমেছে। সরকার দাবি না মানলে আরও বড় আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে ওই সংগঠনগুলি।মঙ্গলবার এবং বুধবার ধর্মঘট (Strike) চলায় সরকারি পরিষেবা প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়ার দাবিতে বরাবর সরব হয়েছে বিজেপি। অথচ সেই বিজেপির দখলে থাকা রাজ্যেই এবার সরকারি কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ। মহারাষ্ট্রের সরকারি কর্মীদের জন্য চালু রয়েছে ন্যাশনাল পেনশন স্কিম। এই স্কিমের অধীনে সরকারি কর্মীদের নিজেদের বেতনের একটি অংশ পেনশন তহবিলে জমা রাখতে হয়। সরকারও ওই একই পরিমাণ অর্থ কর্মীদের পেনশন স্কিমে জমা রাখে। তারপর সেই জমানো টাকা থেকে অবসরের পর, সামান্য পরিমাণ পেনশন দেওয়া হয় ওই সরকারি কর্মীকে।
আরও পড়ুন: Parliament-Adani Row | কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোটে নেই তৃণমূল, ভিন্ন পথে আন্দোলন
মহারাষ্ট্রের সরকারি কর্মচারীরা এনপিএসের বদলে পুরনো পেনশন পদ্ধতি চালু করার দাবি জানিয়েছেন। কংগ্রেস ইতিমধ্যেই তাদের দখলে থাকা রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং হিমাচলপ্রদেশে পুরনো পেনশন ব্যবস্থা (Old Pension Scheme) চালু করেছে। এই স্কিম অনুযায়ী, অবসরের পর সরকারি কর্মীরা নিজের শেষ মূল বেতনের ৫০ শতাংশ মাসিক পেনশন হিসাবে পান। আগামী লোকসভা নির্বাচনেও পুরনো পেনশন ব্যবস্থা ফেরানোকে প্রচারের ইস্যু করতে পারে হাত শিবির।
উল্লেখ্য, কয়েক মাস ধরে জাতীয় পেনশন স্কিম এবং পুরনো পেনশন ব্যবস্থা নিয়ে চাপানউতোর চলছে। বহুবার সরকারি কর্মীরা পুরনো ব্যবস্থা চালু করার দাবি করেছেন। পুরনো পেনশন প্রকল্পে আর্থিক সুবিধা এনপিএসের থেকে অনেক বেশি বলে সরকারি কর্মচারীদের দাবি। পুরনো পেনশন ব্যবস্থা চালুর দাবিতে মহারাষ্ট্রে ধর্মঘট ধুরু করেছেন ১৭ লক্ষ সরকারি কর্মচারী। মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ধর্মঘটী ইউনিয়নগুলির সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকে বসলেও কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। ইউনিয়ন নেতারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পুরনো পেনশন প্রকল্প চালু না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
বকেয়া ডিএ সহ বেশ কিছু দাবিতে পশ্চিমবঙ্গেও লাগাতার আন্দোলন চলছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের। প্রায় এক মাস হতে চলল, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের বেশ কয়েকজন ধর্মতলায় শহীদ মিনার ময়দানের কাছে অনশন চালাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবারই এক অনশনকারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ডিএ-র দাবিতে ১০ মার্চ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল। সরকারি হুমকি উপেক্ষা করে সেই ধর্মঘট যথেষ্টই সফল হয়েছে বলে দাবি মঞ্চের। ওই দিন যাঁরা অফিসে হাজির হননি, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূ্লক ব্যবস্থা নেওয়ারও প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। তাতে অবশ্য দমার পাত্র নয় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও জানিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দেওয়া তৃণমূল সরকাররে পক্ষে সম্ভব নয়। মহারাষ্ট্র এবং পশ্চিমবঙ্গে সরকারি কর্মচারীদের এই আন্দোলনের মধ্যে অনেক মিল খুঁজে পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।