নয়াদিল্লি: রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) লোকসভা সদস্যপদ (Lok Sabha Member) খারিজ (Disqualification) হয়ে যাওয়ায় কি আখেরে কংগ্রেসের (Congress) লাভ হল? আপাতভাবে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে দেশের প্রাচীনতম দল সাম্প্রতিককালের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেল এটা ঠিক। কিন্তু, অন্যদিক দিয়ে ভাবলে অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ছন্নছাড়া দলের এটাই একজোট হওয়ার সবথেকে সুবর্ণ সময়। কারণ, প্রবল কংগ্রেস বিরোধী দলগুলিও এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। দেশের প্রায় প্রতিটি অ-বিজেপি দল রাহুলের লোকসভা সদস্যপদ খারিজ করা নিয়ে তীব্র নিন্দায় মুখর হয়েছেন। সেদিক থেকে দেশের সাধারণ মানুষের সহানুভূতির হাওয়া কংগ্রেসের পতাকাতেই বইছে। বিশেষত, কংগ্রেস আইনি লড়াইয়ের যে ঘোষণা শুক্রবার করেছে, তা সফল হলে আখেরে মুখ পুড়বে বিজেপির (BJP) এবং মুনাফা কংগ্রেসেরই।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi | Mamata Banerjee| রাহুলের পদ খারিজের প্রতিবাদে মমতার টুইট
আদালতে দোষী সাব্যস্ত এবং ২ বছর জেলের সাজা ঘোষণায় রাহুল গান্ধী আজকের পরিস্থিতি অনুযায়ী আগামী ৮ বছর ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। এটা কংগ্রেসের পক্ষে মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা। বর্তমানে রাহুলের বয়স ৫২ বছর। অর্থাৎ ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি লোকসভা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। ২০৩৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে যদি না কোনও কারণে লোকসভা ভোট হয়, তাহলে রাহুল ২০৩৪ সালের নির্বাচনে লড়তে পারবেন। তখন তাঁর বয়স হবে ৬৫ বছর। শুধু এটাই নয়, রাহুলের বিরুদ্ধে আরও বেশ কয়েকটি মামলা চলছে।
এই অবস্থায় রাহুল এবং কংগ্রেস দলের করণীয় কী হতে পারে? কিছু আইন বিশেষজ্ঞের মতে, ওয়েনাড়ের ‘প্রাক্তন’ সাংসদ যদি আপিল আদালত থেকে জেল এবং দোষী সাব্যস্ত করার রায় খারিজ করাতে পারেন, তাহলে তিনি পদ ফিরে পেতে পারেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী লোকসভা সচিবালয় থেকে তাঁর পদ খারিজ হওয়ার পর ওই কেন্দ্রে পুনর্নির্বাচন হবে। রাহুলকে তাঁর সরকারি বাংলো ছেড়ে দিতেও বলা হতে পারে।
বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞ কপিল সিবাল বলেন, আদালতে কেবলমাত্র সাজার রায় খারিজ করালেই হবে না। দোষী সাব্যস্ত করার রায়কেও উচ্চ আদালতে বাতিল করাতে হবে। যদি উচ্চ আদালতে তা না হয়, তাহলে রাহুল গান্ধী আগামী ৮ বছর ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না।
রাহুলের এমপি পদ খারিজ নিয়ে কংগ্রেস-বিরোধী আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল এদিন প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে যা চলছে, তাতে দেশ ধ্বংসের পথে চলেছে। ওরা ভয় পেয়েছে। রাজস্থানের কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ১৯৭৭ সালের কথা মনে করিয়ে বলেছেন, সেদিনও ইন্দিরা গান্ধীর বিরুদ্ধে এরকম হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস জানে, বিশাল জয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদে ফিরে এসেছিলেন। এবারেও দেশের মানুষ দেখতে পাচ্ছে। ২০২৪ সালে বিজেপির বিরুদ্ধে রায় দেবেন ভোটাররা।