আমেরিকা ও পশ্চিমী দুনিয়াকে কড়া বার্তা চীন-রাশিয়ার। বিশ্বে বৃহৎ শক্তিজোট গড়ে তুলতে রাশিয়াকে সঙ্গী হিসেবে পেতে চায় চীন। ক্রেমলিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ক্ষমতাধর শক্তি হিসেবে ভূমিকা নিতে আগ্রহী বেজিং। সাবেক সোভিয়েতের উজবেকিস্তানের সমরখন্দে আয়োজিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের ২২-তম সম্মেলনে এসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এই কথাই জানালেন চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং।
বৃহস্পতিবার রাতে উজবেক প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে এক নৈশভোজসভার আয়োজন করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাতেই সমরখন্দে পৌঁছে গেলেও ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেননি। অনুষ্ঠানের ফাঁকেই পুতিনের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক সেরে ফেলেন জিনপিং।
আরও পড়ুন: BJP Nabanna Abhiyan: চুল, গোঁফ কেটে আত্মগোপন, নবান্ন অভিযানের হাঙ্গামায় গ্রেফতার আরও ৩
কোভিডকালের ২ বছর পর এসসিও সম্মেলন ফের বসছে। আজ, শুক্রবার আনুষ্ঠানিক সম্মেলন শুরু হবে। তার আগেই রাশিয়ার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরে ফেলেন জিনপিং। প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম দুই শক্তিধর দেশের রাষ্ট্রনেতা মুখোমুখি বসলেন। বিশেষত যুদ্ধের কারণে আমেরিকার ডাকে পশ্চিমী দেশগুলি কার্যত একঘরে করেছে রাশিয়াকে। সেই প্রেক্ষিতে এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই নেতাই ইউরোপীয় বা মার্কিন দাদাগিরি প্রতিরোধে কৌশলগত জোট গঠনে একমত হয়েছেন।
বিশাল দুটি গোলটেবিলের দুই প্রান্তে জিনপিং এবং পুতিন ছাড়াও তাঁদের সহকারী ও সরকারি কর্তাব্যক্তিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। কোভিডের পর জিনপিংয়ের এটাই প্রথম বিদেশ সফর। অন্যদিকে, পুতিনের কাছেও মার্কিন ও ইউরোপীয় দেশগুলিকে এক বিশেষ বার্তা দিল এই বৈঠক। কারণ, ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে অনেক শক্তিধর দেশই রাশিয়াকে একঘরে করেছে। এই পরিস্থিতিতে বেজিংয়ের কমিউনিস্ট পার্টি যে তাঁর সঙ্গে আছে, এই সংকেত সুদূরপ্রসারী বলে মনে করছেন অনেকে।
আলোচনায় জিনপিং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলেছেন, বিশ্বে বৃহৎ শক্তি হিসেবে অধিকার কায়েম করতে চীন রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। সামাজিক অস্থিরতার যে বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বিশ্বে, সেখানে স্থায়িত্ব ও ইতিবাচক ভূমিকা নিয়ে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী তারা।
উল্লেখ করা যেতে পারে, আজ শুক্রবার চীনা প্রেসিডেন্ট জিনপিং ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গেও মুখোমুখি আলোচনায় বসবেন। এই প্রথম দু দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মুখোমুখি বৈঠক হবে। এই বৈঠকটিও গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে, সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সামনে হুঁশিয়ারি দেওয়াল তুলে রেখেছে। সে কারণে চীনের সমর্থন পেলে তেলের সাম্রাজ্য তেহরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।