শিলিগুড়ি: অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রাজ্যের মাটি ছুঁল সৎপাল রাইয়ের (Satpal Rai) কফিনবন্দি দেহ৷ ফুল, জাতীয় পতাকায় মোড়া রাইকে দেখতে চোখে জল নিয়ে বাগডোগরা বিমানবন্দরে হাজির ছিলেন কয়েকশো মানুষ৷ তামিলনাড়ুতে কপ্টার (Helicopter crash) দুর্ঘটনায় সিডিএস বিপিন রাওয়াতের (CDS Bipin Rawat) সঙ্গেই মৃত্যু হয় তাঁর নিরাপত্তারক্ষী সৎপালের৷ দার্জিলিংয়ের তাকদার বাসিন্দা সৎপালের কফিন শিলিগুড়ির বাগডোগরা থেকে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর গ্রামের বাড়িতে৷ সেখানে সোমবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহীদ সৎপাল রাইয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
এদিন ব্যাঙডুবি সেনা ছাউনিতে শহীদ সতপাল রাইকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। এদিন তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁর স্ত্রী মন্দিরা রাই, ছেলে বিকাল রাই দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত, শিলিগুড়ি পুরনিগমের প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌতম দেব, শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাও পাটিল-সহ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
বিশেষ গাড়িতে তোলার আগে সৎপালের কফিন৷ নিজস্ব চিত্র৷
ব্যাঙডুবি সেনাছাউনিতে হাবিলদার সৎপাল রাইকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর তাঁর দেহ নিয়ে পরিবারের লোকেরা দার্জিলিংয়ের তাকদার উদ্দেশে রওনা দেন।
সৎপালের দেহ শনাক্ত নিয়ে গোড়ায় বেশকিছু সমস্যা দেখা দেয়৷ শেষ পর্যন্ত তাঁর বাড়ির লোকের অনুরোধে ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা করে সেনাবাহিনী৷ সেই মতো সৎপালের বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ডিএনএ পরীক্ষার পর তাঁর দেহ শনাক্ত হয়৷ তারপরেই স্থির হয় তাঁর মরদেহ গ্রামেই সৎকার করা হবে৷
পরিবারের শেষ ইচ্ছানুযায়ী, রবিবার দুপুরের মধ্যে দিল্লি থেকে বিশেষ বিমানে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয় সৎপালের কফিন৷ খবর পেয়ে আগে থেকেই বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ৷ ছিলেন তিন বাহিনীর আধিকারিকরা৷ এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ৷ বিমান মাটি ছুঁতেই সৎপালের নামে মুর্হুমুহু জয়ধ্বনি৷ বহু মানুষের হাতে ফুলের মালা, পুষ্প স্তবকও দেখা যায়৷
আরও পড়ুন-তৃণমূলের ইস্তাহারে পাড়ায় সমাধান অ্যাপ চালুর প্রতিশ্রুতি
মরদেহ বিমান থেকে নামিয়ে ব্যাঙডুবি সেনাছাউনিতে শেষ শ্রদ্ধা জানান সেনা আধিকারিকরা৷ বেজে ওঠে ‘লাস্ট বিউগল’৷ সেই সময় পরিবারের কেউই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি৷ এরপরই বিশেষ গাড়িতে করে সৎপালের মরদেহ তাকদার উদ্দেশে রওনা দেয়৷ শীতের পড়ন্ত আলোয় তখনও পথের দু’ধারে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ হাত নেড়ে যোদ্ধাকে শেষ বিদায় জানান৷