কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ইউরোপকে অগাধ জলে ফেলে তাদের জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করল রাশিয়া। রক্ষণাবেক্ষণের কাজের অজুহাতে রাশিয়ার আচমকা এই সিদ্ধান্তে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে সরাসরি প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। বুধবার ইউরোপে সরবরাহকারী প্রধান জ্বালানি পাইপলাইনে মেরামতির কাজ চলবে বলে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে প্রথম প্রভাব পড়তে চলেছে বেলজিয়াম ও জার্মানিতে। ভারতীয় সময় ১ সেপ্টেম্বর, সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৩ সেপ্টেম্বর, সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইনে রক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য জার্মানিতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার পুরনো শত্রু জার্মানিকে দিয়ে হাতমকশো শুরু করলেও ইউরোপের অন্যান্য দেশও এখন জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে আতঙ্কিত। এমনিতেই ইউরোপীয় দেশগুলি বেশ কিছুদিন ধরেই আর্থিক মন্দা, বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সঙ্কটে রয়েছে। তার উপর গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় দু-একদিনের মধ্যেই দুরবস্থা টের পাবে ইউক্রেন-যুদ্ধে রাশিয়ার উপর অবরোধ জারি করা দেশগুলি। অনেকেই মনে করছেন, রাশিয়া প্রতিশোধ নিতেই এই পরিস্থিতিতে এরকম ব্যবস্থা নিয়েছে। ঘটনাচক্রে এটাও সত্যি রাশিয়া জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ রাখলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে ইউরোপ।
আরও পড়ুন: Anubrata Mandal: অভিষেককে ইডি-তলবে ‘নাচব নাকি’, জবাব কেষ্টর
এ কারণে এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই পশ্চিমী দেশগুলির উপর রাশিয়ার ‘যুদ্ধাস্ত্র’ প্রয়োগ বলে বর্ণনা করেছন। যদিও রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, মেরামতির কারণেই আচমকা সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে। রাশিয়ার সরকারি জ্বালানি সরবরাহকারী সংস্থা গ্যাজপ্রম জানিয়েছে, অতি দ্রুত মেরামতির কাজ করা হবে। জার্মান সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, তারা জ্বালানি বাঁচিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করবে। আশা করা হচ্ছে, শনিবার থেকে আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। এক আধিকারিক বলেছেন, আমরা রাশিয়াকে বিশ্বাস করি। আশা করছি, শনিবার থেকে অন্তত ২০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ চালু করা হবে। কিন্তু, সত্যিই তা হবে কিনা সেটা বলা যাচ্ছে না।
বাস্তব পরিস্থিতি হচ্ছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গত অগাস্ট থেকে ইউরোপ জুড়ে খোলা বাজারে ৪০০ শতাংশ দাম বেড়েছে জ্বালানির। যার ফলে গ্রাহকের সংখ্যা কমেছে এবং ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বাজারদর সামাল দিতে ইউরোপীয় সরকারগুলিকে লক্ষ লক্ষ ডলার গুনাগার দিতে হচ্ছে। জার্মানিতে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবথেকে বেশি মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে গত অগাস্টে।
জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা প্রসঙ্গে ক্রেমলিনের মুখপাত্র বলেছেন, আমরা মেরামতির কাজ করছি। কিন্তু, অবরোধের জেরে যন্ত্রাংশ জোগাড়ে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত জুন ও জুলাই মাসে রাশিয়া এই একই অজুহাতে পর্যায়ক্রমে ৪০ ও ২০ শতাংশ জ্বালানি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে।