প্যারিস: ফ্রান্সের দাঙ্গাকারীরা এবার রাজধানীর দক্ষিণ শহরের এক মেয়রের বাড়িতে চলন্ত গাড়ি ঢুকিয়ে হামলা চালাল। সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এই ঘটনায় মেয়রের স্ত্রী এবং এক সন্তান জখম হয়েছেন। হামলার সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা ঘুমোচ্ছিলেন। মেয়র ভিনসেন্ট জঁব্রুন টুইটে লিখেছিলেন, গত রাতে সন্ত্রাস-আতঙ্কের এক নতুন মাত্রায় পৌঁছল। প্রসঙ্গত, এক কিশোরকে পুলিশ গুলি করে খুনের ঘটনার পর থেকে আজ নিয়ে পঞ্চম দিনে পড়ল ফ্রান্সের দাঙ্গা। এরই মধ্যে চীনা পর্যটক ভর্তি বাসে আক্রমণ করে দাঙ্গাকারীরা। তাতে এক চৈনিক পর্যটক জখম হয়েছেন। হামলাকারীরা বাসে ঢিল ছুড়লে কাচ ভেঙে তিনি আহত হন। এরপরই চীনা দূতাবাস থেকে ফ্রান্স সরকারের কাছে পর্যটকদের নিরাপত্তা দাবি করে ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে।
ফ্রান্সের দাঙ্গায় রবিবার ভোর পর্যন্ত ৭১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের গুলিতে এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনায় জ্বলছে ফ্রান্স। রাজধানী শহরে এবং বিভিন্ন জায়গায় উন্মত্ত জনতা অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর চালিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে প্রশাসনকে সোমবার পর্যন্ত রাত্রিকালীন কার্ফু জারি করতে হয়েছে। তাতেও দমানো যাচ্ছে না বিক্ষোভকারী জনতাকে। ফ্রান্সে ১৭ বছর বয়সি নাহেল নামে এক কিশোরকে পয়েন্ট ব্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে এক পুলিশ গুলি করে খুন করে। সেই থেকে উত্তেজনার আগুনে ফুটছে গোটা দেশ।
পুত্রশোকে বিহ্বল নাহেলের মা বলেছেন, আমি পুলিশকে দোষী ঠাউরাচ্ছি না। আমার অভিযোগ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। যে আমার ছেলের প্রাণ নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ৩৮ বছরের ওই অফিসার শুধু আরবি ছেলে বলে অতটুকু বাচ্চাকে মেরে ফেলতে পারে তার শাস্তি চাই। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবারই ওই পুলিশ কর্মীকে গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ গঠিত হয়েছে।
ওই খুনের পর থেকেই ফ্রান্স পুলিশের জাতি বিদ্বেষ নীতির বিরুদ্ধে ফুঁসছে রাজধানীর উপকণ্ঠ। কম আয়ের এবং বিভিন্ন জাতির মানুষ দেশজুড়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। যা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রশাসন। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ মানুষকে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। প্রতিবাদের নামে হিংসা ছড়ানোকে অযোক্তিক বলে বর্ণনা করেন তিনি।