কলকাতা: বদলির ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আবার পুরনো পদে ফিরিয়ে আনা হল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের (RG Kar Medical College) অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকায় সন্দীপকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে অর্থোপেডিক বিভাগে বদলি করা হয়। দু’দিনের মধ্যে সেই বদলির নির্দেশ বাতিল করা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ (NRS Medical College) হাসপাতালেও। সেখানকার অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান অভিজিৎ ভক্তকে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে (Cooch Behar Medical College) বদলি করে। বুধবার সেই নির্দেশিকা বাতিল করে তাঁকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ওই চিকিৎসক শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর বদলির নির্দেশ বাতিল হয়ে যায়। অথচ কত ডাক্তার গুরুতর সমস্যার জন্য বদলি চেয়েও বদলি হতে পারছেন না। তাঁর অভিযোগ, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চূড়ান্ত স্বজনপোষণ চলছে। সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, ওই চিকিৎসক দশ বছর ধরে একই হাসপাতালে রয়ে গিয়েছেন শাসকদলের লোক বলে। অভিজিৎ অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
আরও পড়ুন: Bangla Bandh | Kurmi Protest | কুড়মিদের দাবির বিরুদ্ধে ৮ জুন বাংলা বনধের ডাক আদিবাসীদের
আরজি কর হাসপাতালে সন্দীপের জায়গায় অধ্যক্ষ করে আনা হয়েছিল উলুবেড়িয়ার শরৎচন্দ্র মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সনৎ চট্টোপাধ্যায়কে। তিনি বৃহস্পতিবার আরজি করে অধ্যক্ষ পদে কাজ করতে এসে দেখেন, ঘর বন্ধ। অভিযোগ, তিনি আসার কিছু সময় আগেই সন্দীপ কয়েকটি ফাইল নিয়ে ঘরে তালা দিয়ে চলে যান। সেই সময় সুপার সঞ্জয় বশিষ্ঠও হাসপাতালে ছিলেন না। অসুস্থতার জন্য তিনি হাসপাতাল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারাও। বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনা নিয়ে সন্দীপ এবং সনৎ মুখ খুলতে চাননি। সন্দীপের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে আরজি কর হাসপাতালে। বছর খানেক আগে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে মেডিক্যাল পড়ুয়ারা আন্দোলনে নামেন। অভিযোগ উঠেছিল, তাঁদের অবস্থানস্থল মাড়িয়েই সন্দীপ ঘোষ চলে গিয়েছিলেন। ওই আন্দোলন চলাকালীন পড়ুয়ারা সন্দীপকে তাড়া করেছিলেন। তাঁকে পালাতে দেখা গিয়েছিল একটি ভিডিয়োতে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি কলকাতা টিভি ডিজিটাল। সরকার বিরোধী চিকিৎসক সংগঠনগুলির অভিযোগ, দুই হাসপাতালেই এই দুই ডাক্তার শাসকদলের ঘনিষ্ঠ। তাদের আরও অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতরে যে চূড়ান্ত অরাজকতা চলছে, এই দুই ঘটনা তার বড় নজির।