লাদাখ: রাহুল গান্ধী মানেই নরেন্দ্র মোদির শিরে সংক্রান্তি। লাদাখের মাটিতে দাঁড়িয়ে রবিবার ফের প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা কংগ্রেস নেতার। তিনি বলেন, আমাদের দেশের, লাদাখের মানুষের জমি কেড়ে নিয়েছে চিন, কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলে বেড়াচ্ছেন ভারতের এক ইঞ্চি জমিও হাতছাড়া হয়নি। এদিন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর জন্মদিনে বাবার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন রাহুল। পেঙ্গন লেকের ধারে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে একটি প্রার্থনাসভার আয়োজন করা হয়। নয়াদিল্লিতেও রাজীব গান্ধীর স্মারক ‘বীরভূমি’তে সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে সহ দলের নেতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পাশাপাশি সংসদেও তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
লাদাখে এদিন রাহুল বলেন, এই এলাকার মানুষের বসতজমিও দখল করেছে চিন। লাদাখের মানুষ এনিয়ে খুবই ভয়-আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এখানকার মানুষ বলছেন, চিনা সেনা তাঁদের এলাকায় ঢুকে পড়ছে। তাঁদের জমি কেড়ে নিচ্ছে। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে বসে বলে বেড়াচ্ছেন দেশের এক ইঞ্চি জমিও হাতছাড়া হয়নি। কিন্তু এটা সত্যি নয়, এখানকার যে কোনও কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই প্রকৃত সত্যটা জানা যাবে।
আরও পড়ুন: দেশ গঠনের ভাবনাকে ‘সদ্ভাবনা’য় বদলে দিয়েছিলেন রাজীব গান্ধী
রাহুল আরও বলেন, লাদাখকের মানুষ ও এই অঞ্চলকে যে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে তাতে স্থানীয়রা খুশি নন। মানুষের মধ্যে অসন্তোষের শেষ নেই। অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা সুখী নন। তাঁরা এখান থেকে ভোটে দাঁড়াতে চান। মানুষের হাতে কাজ নেই। চাকরি নেই। তাঁরা এখন প্রকাশ্যে বলছেন, দিল্লি থেকে আমলাতান্ত্রিক প্রশাসনে তাঁরা ক্লান্ত। তাঁরা এখন এখান থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে লাদাখের দাবি তুলে ধরতে উন্মুখ, বলেন রাহুল।
রাহুলের এই মন্তব্যের পরপরই গান্ধী পরিবারের একদা পারিবারিক বন্ধু সিন্ধিয়া পরিবারের বর্তমান কর্তা বিজেপি মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস যেন একবার নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে। এরা সেই কংগ্রেস যারা একদিন স্লোগান তুলেছিল, ‘হিন্দি চিনি ভাই ভাই’ এবং ৪৫ হাজার বর্গ কিমি এলাকা চিনের হাতে তুলে দিয়েছিল, তারা যেন তাদের অতীতের কৃতকর্মের দিকে ফিরে তাকায়। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কবিন্দর গুপ্তা রাহুলকে ব্যঙ্গ করে বলেছেন, উনি ঘুরতে গিয়েছেন, ঘুরে বেড়ান না। লাদাখ নিয়ে উনি কী জানেন। কংগ্রেসের মনের ভিতরেই রয়েছে দেশের সবকিছু খারাপ। উনি যা বলেছেন তাতে দেশের সেনাদের মনের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
যদিও রাহুলের পক্ষে মতপ্রকাশ করেছেন উদ্ধব সেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। তিনি বলেছেন, ভারতের জমি দখল করেছে চিন। তার প্রমাণও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী একথা মানতে না চাইলে তা ভারতমাতার প্রতি অবিচার। যদি রাহুল এরকম কিছু বলে থাকেন, তাহলে নিশ্চই ভেবেচিন্তেই বলেছেন।