নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের মুখে দার্জিলিং পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ হতে চলেছে। জিএনএলএফ-সহ অনেক দলই এনডিএ সঙ্গ ছাড়তে চাইছে। এই দলগুলি কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছে। সদ্য তৃণমূলত্যাগী এবং প্রাক্তন জিটিএ প্রধান বিনয় তামাং সম্প্রতি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির হাত ধরে। তাঁকে প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকও করে দেওয়া হয়েছে। বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও বিজেপির থেকে দূরত্ব বজায় রাখছে। একই অবস্থান সুবাস ঘিসিং প্রতিষ্ঠিত গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট বা জিএনএলএফেরও।
মঙ্গলবার দিল্লিতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেন বিনয় তামাং। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কালিম্পংয়ের প্রাক্তন বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী, হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড, জিএনএলএফের সম্পাদক মহেন্দ্র ছেত্রী প্রমুখ। রাহুলের সঙ্গে ছিলেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সূত্রের খবর, পাহাড়ের সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়েই এই নেতারা রাহুল-সহ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। বিজেপি যে গত কয়েক বছর ধরে কথা দিয়ে কথা রাখেনি, পাহাড়ের এই নেতারা রাহুলদের কাছে সেই অনুযোগ করেন। একই সঙ্গে তৃণমূলের প্রতি যে তাঁদের মোহ কেটে গিয়েছে, সে কথাও জানাতে ভোলেননি পাহাড়ি নেতারা।
আরও পড়ুন: ছিল না চিকিৎসক, গাফিলতির জেরে নাবালিকার মৃত্যু, অভিযোগ পরিবারের
প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি এই দলগুলি এনডিএ ছেড়ে কংগ্রেসের দিকে ভিড়ছেন? পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দার্জিলিংয়ের এই নেতাদের রাহুলদের সঙ্গে বৈঠক লোকসভা ভোটের মুখে পাহাড়ের রাজনীতির ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পাহাড়ের বিশিষ্ট এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ী অজয় এডওয়ার্ড গত বছরের শুরুতে হামরো পার্টি গঠন করেন। তিনি এক সময় জিএনএলএফের নেতা ছিলেন। গত বছরই দার্জিলিং পুরসভার ভোটে ৩২টির মধ্যে ১৮টি আসন পায় হামরো পার্টি। তিনি নিজে অবশ্য হেরে যান। প্রাক্তন জিটিএ প্রধান বিনয় তামাংও এক সময় জিএনএলএফের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। পরে তিনি তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁকেই মমতা জিটিএর চেয়ারম্যান করেন। পরে তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে কংগ্রেসে যোগ দেন। বিনয়, অজয়, মহেন্দ্রদের পাহাড়ে এখনও ভালো প্রভাব রয়েছে। হরকা বাহাদুরেরও পাহাড়ের রাজনীতিতে একটা প্রাসঙ্গিতকা রয়েছে।