কলকাতা: রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Rabindra Bharati) উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়কে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Presidency University) উপাচার্য হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব দিল রাজভবন। সোমবার দুপুরেই রাজভবন থেকে শুভ্রকমলের কাছে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের চিঠি গিয়েছে। শিক্ষা মহল এই ঘটনাকে নজিরবিহীন বলে মনে করছে। একই সঙ্গে দুই বিশ্ববিদ্যালের উপাচার্যের কাজ চালানো কতটা সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এমনিতেই শুভ্রকমল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। সেখানকার তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী ইউনিয়নের জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছেন না। উপাচার্য বাড়ি বসে কাজ চালাচ্ছেন। শুভ্রকমলের অভিযোগ, কর্মচারী ইউনিয়ন তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে, যখন তখন ইউনিয়নের নেতারা তাঁর ঘরে ঢুকে পড়ছেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। তাই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তিনি বিষয়টি রাজ্যপালকেও জানিয়েছেন। তার মধ্যেই আবার শুভ্রকমল প্রেসিডেন্সির বাড়তি দায়িত্ব সামাল দেবেন কেমন করে, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
রবিবার গভীর রাতে রাজভবন বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। তা নিয়ে রাজ্য সরকার রাজ্যপালের উপর ক্ষুব্ধ। এদিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, রাজ্যপাল সংবিধান মানছেন না। তিনি ইন্ডিয়া জোটকে ভয় পাচ্ছেন। তাই তড়িঘড়ি নিজের পছন্দের বিজেপির লোকজনকে উপাচার্য পদে বসাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: রাজ্যে ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ
উচ্চশিক্ষা নিয়ে প্রথম থেকেই রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত চলছে নবান্নের। মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য পদে বসানোর বিল বিধানসভায় বহুদিন আগে পাশ হওয়ার পরেও তা রাজভবনে ফেলে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য থেকে শুরু করে শাসকদলের নেতারা উঠতে বসতে রাজ্যপালকে বিজেপির দালাল বলে গাল পাড়ছেন। মুখ্যমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যপাল অবিলম্বে ওই শিক্ষা বিল ছেড়ে দিন, নতুবা তিনি তা ফিরিয়ে দিন।
নবান্নের অভিযোগ, সার্চ কমিটিকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে রাজ্যপাল যখন তখন যাঁকে তাঁকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য পদে বসিয়ে দিচ্ছেন। আবার তাঁদের বরখাস্তও করছেন। ব্রাত্য বলেন, এই অবস্থা দিনের পর দিন চলতে পারে না। আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারি। শিক্ষা মহলের অভিযোগ, রাজভবন-নবান্ন টানাপড়েনে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার চূড়ান্ত ক্ষতি হচ্ছে। তা প্রায় ভেঙে পড়ার জোগাড় হয়েছে।