নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটন: পলাতক খলিস্তানপন্থী (Pro Khalistan) বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অমৃতপাল সিং (Amritpal Singh) এখনও অধরাই। আর তা নিয়ে মঙ্গলবার পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টের (Punjab and Hariyana High Court) তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য পুলিশ (Punjab Police)। আদালত এদিন পুলিশকে বলেছে, আপনাদের ৮০ হাজার কর্মী রয়েছে। কী করে অমৃতপাল পালিয়ে বেড়াতে পারে? রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরে হাইকোর্ট এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে, লন্ডনের পর আমেরিকার (USA) সানফ্রান্সিসকো (San Francisco)। খলিস্তানপন্থীদের হামলা ভারতীয় কনসুলেট জেনারেল (Indian Consulate General) অফিসে। এই ঘটনার একযোগে তীব্র নিন্দা করেছে ভারত ও মার্কিন সরকার। দিল্লিস্থিত মার্কিন পররাষ্ট্র সংক্রান্ত আধিকারিককে ডেকে পাঠিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করতে দায়িত্বশীল হতে হবে। এধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। ওয়াশিংটন ডিসির ভারতীয় দূতাবাস থেকেও মার্কিন বিদেশ মন্ত্রককে একই ভাষায় বার্তা পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: Transgender Job | মহারাষ্ট্রে সরকারি চাকরিতে রূপান্তরকামীদের আসন সংরক্ষণের প্রক্রিয়া শুরু
অন্যদিকে, একইভাবে মার্কিন সরকারও সানফ্রান্সিসকোয় ভারতীয় কনসুলেট অফিসে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। প্রতিদিনের মতো সোমবারও হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক সম্মেলনে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কোঅর্ডিনেটর জন কির্বি বলেন, এ ধরনের হামলা মেনে নেওয়া যায় না। আমেরিকার দূতাবাস সম্পর্কিত নিরাপত্তা অফিসাররা স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় এবং দোষীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় তার ব্যবস্থা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার খলিস্তানপন্থী কিছু লোক খলিস্তানের দাবিতে স্লোগান দিতে দিতে কনসুলেট জেনারেল অফিসের ব্যারিকেড ভেঙে ঢুকে দুটি খলিস্তানের পতাকা টাঙিয়ে দেয়। যদিও কনসুলেট অফিসের ২ নিরাপত্তা কর্মী সেই পতাকা সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে ফেলেন। এরপরই ক্ষিপ্ত প্রতিবাদকারীরা কনসুলেট অফিসে ঢুকে পড়ে। লোহার রড, লাঠি দিয়ে জানালা-দরজা ভাঙতে শুরু করে। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু লোক ওই হামলায় ছিল। তাদের চিহ্নিত করার কাজ চালাচ্ছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাও। সানফ্রান্সিসকোর কনসুলেট জেনারেল অফিসের দেওয়ালে খলিস্তানপন্থীরা স্প্রে রং দিয়ে লিখে দেয়, ‘ফ্রি অমৃতপাল’।
‘দ্বিতীয় ভিন্দ্রানওয়ালে’ বলে অনুগামীদের মধ্যে জনপ্রিয় পলাতক অমৃতপাল সিংকে নিয়ে যখন পঞ্জাব এবং বিদেশের মাটিতেও দেশের মুখ পুড়ছে, তখন দিন চারেক পর নীরবতা ভাঙল আম আদমি পার্টির সরকার। মঙ্গলবার পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেন, রাজ্যের শান্তি এবং সম্প্রীতি ও দেশের প্রগতি আপ সরকারের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু কিছুদিন ধরে বিদেশি শক্তির সাহায্য নিয়ে কিছু মানুষ রাজ্যের শান্তির পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ঘৃণার বীজ বপন করছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পঞ্জাবিরা বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিখ্যাত। কিন্তু কেউ যদি আমাদের চ্যালেঞ্জ করে, তাহলে মুখ ভেঙে দেওয়ার মতো জবাবও দিতে পারে পঞ্জাব।