কলকাতা: শিক্ষা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জেলযাত্রার পর এমনিতেই চাপে রয়েছে শাসকদল তৃণমূল। সেই চাপ আরও বাড়ল কলকাতা হাইকোর্টে এক মামলাকে ঘিরে। শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি কীভাবে ফুলে ফেঁপে উঠছে, তা জানতে চেয়ে মামলা করেছেন বিপ্লব চৌধুরি নামে এক ব্যক্তি। ওই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলাকারীর আবেদনে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, অর্জুন সিং-সহ একাধিক তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রীর নাম রয়েছে। নাম রয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্তমান মন্ত্রী অরূপ রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দউতম দেব প্রমুখেরও।
পার্থ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরেই বিরোধীরা আন্দোলনে নেমেছেন। বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, এই শিক্ষা কেলেঙ্কারিতে শুধু পার্থ আর তাঁর বান্ধবীই জড়িত নন। এতে শাসকদলের আরও অনেক নেতা-মন্ত্রীর নাম জড়িয়ে আছে। তাঁদেরও তদন্তের আওতায় আনতে হবে। সিবিআই এবং ইডি শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছে, জেলায় জেলায় শাসকদলের অনেক নেতা, বিধায়কের নাম জড়িয়ে গিয়েছে। ওই নেতা, বিধায়কেরা লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে।
দুদিন আগে তমলুকে এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে চড়াও হন টাকা দিয়ে প্রতারিত বেশ কয়েকজন যুবক-যুবতী এবং তাঁদের অভিভাবকরা। ওই নেতাকে বাড়িতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ জনতা নেতার স্ত্রী এবং ছেলেকে ব্যাপক মারধর করেন। ছেলেকে গাছে বেঁধে পেটানো হয়। ওই নেতার স্ত্রী আবার স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যা। তাঁরা ওই চাকরিপ্রার্থীদের বাড়িতে ঢুকতে প্রথমে বাধা দেন। পরে তাঁরা জোর করে ঢুকে পড়েন। ওই তৃণমূল নেতা এখন ফেরার। মারধর করার অভিযোগে পুলিস রবিবার পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁরা এখন জেল হেফাজতে। শাসকদলের আশঙ্কা, আগামিদিনে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়বে।
তার মধ্যেই সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তির ফুলে ফেঁপে ওঠা নিয়ে মামলা হল। এখন পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে এতে যে বিড়ম্বনা বাড়বে, তাতে কোনও সংশয় নেই।