কলকাতা: যাদবপুর-কাণ্ডের (Jadavpur University Incident) ১০ দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন রাজ্যপাল তথা আচার্য বোস। নতুন অস্থায়ী উপাচার্য (Vice Chancellor) হিসাবে দায়িত্ব পেলেম বিশ্ববিদ্যালয়েরই গণিত বিভাগের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে (Prof Buddhadeb Sau)। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্যহীন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।তার মধ্যে হস্টেলে র্যাগিংয়ের তত্ত্ব উঠতেই কর্তৃপক্ষের ভূমিকাও নিয়ে প্রশ্নে উঠতে শুরু করেছে। বুধবারই বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষপদস্থ আধিকারিকদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেখানেও স্থায়ী উপাচার্যের বিষয়টি নিয় আলোচনা হয়। এর পরই এ বিষয়ে পদক্ষেপ করলেন রাজ্যপাল।
দায়িত্ব পওয়ার পর কলকাতা টিভি অনলাইনকে অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউ জানান, ছাত্ররা আমাদের সন্তান তুল্য। ভুল করলে শাসন করলেও তাদের আবার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনফ। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তনীদের থাকার জন্য নয়। প্রাক্তনীদের থাকতে দিয়ে কর্তৃপক্ষ ভুল করেছে।
গত ৩১ মে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ মেয়াদ শেষ হয় সুরঞ্জন দাসের। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। ওই পদে অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে যাদবপুরেরই ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক অমিতাভ দত্তকে নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। কিন্তু গত ৪ অগস্ট অমিতাভও ইস্তফা দেন। এর পর আর নতুন করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যহীন হয়ে ছিল। আর তার মধ্যেই গত ৯ অগাস্ট বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। সেই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। এই ঘটনায় রাজ্যপালের প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই আবহে এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করলেন আচার্য।
আরও পড়ুন: নিয়োগ মামলায় শনিবার শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন নীলাদ্রি দাস
এই ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিরাপত্তারনিয়ে প্রশ্ন উঠে। কারণ প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়ার মৃত্যু হয় র্যাগিংয়ের জেরেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন সিসিটিভি লাগানো হয়নি তা নিয়ে চারিদিকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ইউজিসির গাইড লাইন থাকা সত্ত্বেও এই বিষয়ে কোনও হেলদোল নেই কর্তৃপক্ষের। রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনও প্রশ্ন তুলেছে তা নিয়ে। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু ও ডিন অফ স্টুডেন্টতেও লালবাজারে ডেকে পাঠায় পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি শুক্রবার মেস কমিটির বেশ কয়েকজনকে তলব করে। ওই রাতে ঘটনার সময় যারা ছিল তাদের মধ্যে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের কয়েকজনকেও ডাকা হয়েছে। হস্টেলের ঘরের ওই পড়ুয়াকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে কমিটি। পাশাপাশি প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা জানিয়েছেন তাদেরও মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে হস্টেলে।