কলকাতা: সরকারপন্থী প্রাক্তন উপাচার্য এবং শিক্ষাবিদরা চান, মুখ্যমন্ত্রীই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হন। আর সরকার বিরোধী বাম মনোভাবাপন্ন বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন চায়, মুখ্যমন্ত্রী নন, আচার্য হন কোনও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ। সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে অল্প সময়ের ব্যবধানে দুটি সাংবাদিক বৈঠকে এই বৈপরিত্যই উঠে এল। তবে দুই পক্ষেরই কিছু কিছু জায়গায় মিলও দেখা গিয়েছে। দুই পক্ষই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য চায়। দুই পক্ষই উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে চলতি অচলাবস্থার নিরসন চায়। আবার রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তার নিন্দায়ও সরব দুই গোষ্ঠীই।
রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০টি শিক্ষক সংগঠন এদিন সাংবাদিক বৈঠক ডাকে কলকাতা প্রেস ক্লাবে। তাদের তরফে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, যাদের রেফারি হয়ে খেলা পরিচালনার কথা, তারাই আজ একে অপরের সঙ্গে দড়ি টানাটানিতে ব্যস্ত। আর তাতেই ক্ষতি হচ্ছে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির, ক্ষতি হচ্ছে পড়ুয়াদের। তিনি বলেন, আমরা চাই প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হোক। স্বাভাবিক হোক পঠনপাঠন এবং প্রশাসনিক কাজকর্ম। স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় দৈনন্দিন কাজকর্মব ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে। সেখানে বহু শিক্ষক পদ শূন্য। এসবের দিকে সরকারের কোনও নজর নেই।
পার্থপ্রতিম আরও জানান, আচার্য হিসেবে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী বা কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে চান না। তার বদলে রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাবহীন বিশিষ্ট কোনও শিক্ষাবিদকে আচার্য করা যেতে পারে। এই বাম শিক্ষক সংগঠনগুলি উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে যে অর্ডিন্যান্স আনতে চলেছে, তাতে পাঁচ সদস্যের সার্চ কমিটিতে রাজ্য সরকারেরই তিন প্রতিনিধি থাকার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে সরকারপন্থী প্রাক্তন উপাচার্য এবং শিক্ষাবিদরা চান, রাজ্যপালের বদলে আচার্যের পদে বসুন মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে শাসকদল বিধানসভায় বিল পাশ করিয়েছে। সেই বিল এখনও রাজভবনে বন্দি। রাজ্য সরকার সেই বিল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বারবার রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছে। প্রাক্তন উপাচার্যদের তরফে ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, বিধানসভায় যখন বিল পাশ হয়েছে, তখন সংখ্যাধিক্যের মত মুখ্যমন্ত্রীর দিকেই। তিনি জানান, রাজ্যের প্রায় ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন হয়ে রয়েছে। আচার্য তার মধ্যে নিজের পছন্দের ১৩জনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁদের উপাচার্য বলা যায় না। ওমপ্রকাশ মিশ্র-সহ অন্যরা রাজ্যপালের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেন।