সিউড়ি: করোনায় বন্ধ স্কুল। ছেলেমেয়েরা বই ছেড়ে হাতে তুলে নিয়েছে হাতুরি। ভাঙছে পাথর। এই খবর প্রকাশিত হয় কলকাতা টিভির ওয়েব ডেস্কে। তারপরই এলাকার আদিবাসী ছেলেমেয়েদের জন্য পাঠশালা তৈরি করল পুলিশ। বীরভূমের মহম্মদ বাজার এলাকার ঘটনা।
এলাকার সিংহভাগ বাসিন্দাই আদিবাসী সম্প্রদায়ের। যাদের মূল পেশা পাথর খাদান অঞ্চলের কাজ। করোনার ফলে দীর্ঘদিন স্কুলে যাচ্ছে না পড়ুয়ারা। পরিবারের আর্থিক অনটন দূর করতে পাথর ভাঙার কাজে যুক্ত হয়ে পরছে তারা।
স্কুল বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন ওই এলাকার শিক্ষকেরা। এলাকায় আদিবাসী ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরিতে যোগদানের বিষয় সুনিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই বীরভূম পুলিশের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল স্বপ্নের উড়ান প্রকল্প। এবার বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী ঘোষণা করলেন, আদিবাসী ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চালানোর জন্য পাঠশালা চালু করা হবে। প্রাথমিকভাবে আদিবাসী অঞ্চলের তিনটি জায়গায় এই স্কুল চালাবে পুলিশ। সেখানে শিক্ষকের ভূমিকায় থাকবে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। এদিন হরিণশিঙ্গা ফুটবল ময়দানে এই কথা ঘোষণা করেন জেলার পুলিশ সুপার।
আরও পড়ুন: আউশগ্রামে পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলেকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার আরও এক তৃণমূল নেতা
এলাকার অধিকাংশই পাথর শিল্পাঞ্চল। এখানেই রয়েছে ডেউচা পাচামি পাথর খনি। সেই খনি থেকে পাথর উত্তোলন হয়, ক্রাশারে ভাঙ্গা হয়। তবে তার আগে খাদানের বড় বড় পাথর হাতুড়ি মেরে নির্দিষ্ট মাপের করতে হয়। এই কাজই পরিবারের সঙ্গে করে বীরভূমের মহম্মদ বাজারের পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকার হাই স্কুলের অধিকাংশ আদিবাসী পরিবারের সন্তানেরা।
দৈনিক ১০০ থেকে ১২০ টাকা মজুরিতে অথবা গাড়ির পিছু সাড়ে ৫ হাজার টাকা হারে কাজ করে তারা। আর এভাবেই দিন কাটে হরিণশিঙ্গা, পাচামি, তালবাঁধ, গিরিজোর, দেওয়ানগঞ্জ প্রভৃতি এলাকার আদিবাসী শ্রমজীবী মানুষদের। কবে স্কুল খুলবে তার ঠিক নেই। শিশুদের পড়াশোনায় ফেরাতে তাই এবার উদ্যোগী হল পুলিশ।
আরও পড়ুন: সুস্মিতা দেব-কে রাজ্যসভায় পাঠাচ্ছে তৃণমূল