কলকাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি গণধর্ষণের তদন্তে পুলিশের (Police) ভূমিকায় একইসঙ্গে বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ওই ঘটনায় নরেন্দ্রপুর এবং লেক থানার ওসিকে (OC) আলাদা আলাদা করে লিখিতভাবে নির্যাতিতার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। বৃহস্পতিবার শুনানিতে এমনই নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। পাশাপাশি নির্যাতিতার অধিকারভঙ্গের জন্য দুই থানার ওসিকে ৫ হাজার টাকা করে প্রতীকী ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছে আদালত।
ওই গণধর্ষণ মামলার তদন্ত করছে লেক থানা। আদালত সূত্রের খবর, গত ২৯ জুন লেক থানার তরফে নরেন্দ্রপুর থানায় একটি ইমেল করে জানানো হয়, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৫ জুলাই দুপুর ১২ টায় হাজির হতে হবে নির্যাতিতাকে। কিন্তু ৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কিছুই জানতে পারেননি নির্যাতিতা। হলফনামায় কম্পিউটার অপারেটরের উপর দোষ চাপিয়ে দায় সেরেছেন নরেন্দ্রপুর থানার ওসি। হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, কম্পিউটার অপারেটর ইমেলটি খেয়াল করেননি।
আরও পড়ুন:মমতা-অভিষেকের ধরনা কর্মসূচিকে ভয় পাচ্ছে শাহি পুলিশ, ফের অনুমতি চাইল তৃণমূল
আদালত লেক থানার ভূমিকায় বিস্মিত। নির্যাতিতার ফোন নম্বর থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সরাসরি না জানিয়ে কেন লেক থানা ইমেল করে নরেন্দ্রপুর থানাকে জানাতে গেল, সেই প্রশ্ন তুলেছে আদালত। স্থানীয় সূত্রের খবর, ৪ জুলাই হঠাৎ করে পুলিশ সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নির্যাতিতাকে হাজিরার কথা জানানো হয়। রাত দুটোর সময় নির্যাতিতার বাড়ি যান দুই পুলিশ আধিকারিক। কেন মাঝরাতে পুলিশ নির্যাতিতার বাড়ি গেল, তাও আদালতের বোধগম্য হয়নি।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, সুপ্রিম কোর্ট তার বিভিন্ন নির্দেশে মাঝরাতে পুলিশি সক্রিয়তার বিরুদ্ধে মতপোষণ করেছে। তারপরেও পুলিশ কী করে মাঝরাতে এত সক্রিয় হল, প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি বাগচী। তিনি বলেন, তদন্ত বা ন্যায়বিচারের স্বার্থে গণধর্ষণের শিকার এক মহিলার বাড়িতে মাঝরাতে পুলিশ যাচ্ছে, এমন ঘটনা আমরা কখনও দেখেনি। কোন অসাধু শক্তির দ্বারা পরিচালিত হয়ে পুলিশ এই বাড়াবাড়ি করেছে, তা খুঁজে দেখতে হবে।