নয়াদিল্লি: আর কিছুক্ষণের মধ্যেই বসছে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের মহাবৈঠক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই বৈঠকের পৌরোহিত্য করবেন। চীন, পাকিস্তান, রাশিয়া সহ একাধিক দেশ যোগ দেবে এই বৈঠকে। এসসিওর সদস্য দেশগুলির পাশাপাশি ইরান, বেলারুশ এবং মঙ্গোলিয়াকে অতিথি রাষ্ট্র হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মোদির সভাপতিত্বে আয়োজিত ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, এসসিও-র ২২তম শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবে চীন এবং পাকিস্তান। শেহবাজ শরিফ, শি জিনপিং, পুতিনও অংশ নেবেন।
শীর্ষ সম্মেলন শুরু হবে দুপুর সাড়ে ১২টায়। শেষ হবে দুপুর ৩টেয়। চলতি বছর গোয়ায় এসসিও-র বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি, চিনের বিদেশমন্ত্রী কিন গ্যাং এবং রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে উজবেকিস্তানের সমরখন্দে সর্বশেষ এসসিও শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০৫ সালে আমন্ত্রিত দেশ হিসাবে এসসিওতে ভারতের যোগসূত্র শুরু হয় এবং ২০১৭ সালে পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হয়ে ওঠে ভারত।
আরও পড়ুন: PM Narendra Modi | ‘২৪ নয়, ২০৪৭-এর লক্ষ্যে এগিয়ে চলার নির্দেশ মোদির
আগামী বছর এসসিও আটটির পরিবর্তে ১০টি দেশের একটি সংগঠনে পরিণত হবে। এবার থেকে এসসিওর সদস্যদেশ হতে চলেছে ইরানও। এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে মঙ্গলবার সদস্য দেশগুলির মধ্যে ১৫টি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই চুক্তিগুলি পারস্পরিক ব্যবসা বাণিজ্য বৃদ্ধি, নতুন সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সহযোগিতা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসার সহ একাধিক বিষয় থাকবে। সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে এসসিওর সম্প্রসারণের বিষয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সংযোগ, ঐক্য, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সম্মান এবং পরিবেশ সুরক্ষার ওপর আলোচনা হতে চলেছে বৈঠকে।
ইউক্রেন যুদ্ধ, লাদাখে সীমান্ত সংঘাত এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্তের মাঝেই বৈঠকে বসতে চলেছে এই বৈঠক। ওয়াগনার বিদ্রোহের পর এই প্রথম এসসিও সম্মেলনের মতো কোনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অংশ নেবেন। উল্লেখ্য, গত মাসের শেষে ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহে বিপাকে পড়েছিল পুতিন প্রশাসন। মূলত রাশিয়ার সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ‘পুতিনের রাঁধুনি’ ইয়েভগেনি প্রিগোজিন। তাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল পুতিনেরও।
এই অধিবেশনে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। যার মধ্যে রয়েছে তালিবানি শাসনে জর্জরিত আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি। আলোচনা করা হবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও। উঠে আসতে পারে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গও। এছাড়া, গত তিন বছর ধরে লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনের মধ্যে চাপানউতোর চলছে। যে কোনও সময়ে সংঘাতে জড়াতে পারে দুই দেশ। কয়েকদিন আগেই চীনকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই আবহে এদিন মুখোমুখি হতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি ও শি জিনপিং। দুই প্রধানের মধ্যে কী আলোচনা হবে তার দিকে নজর থাকবে সব মহলের।
এই অধিবেশনে মূলত পাঁচটি বিষয়ের উপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে। এগুলি হচ্ছে- স্টার্টআপ ও বিভিন্ন গবেষণার উন্নতি, প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিতে জোর দেওয়া, ডিজিটাল সম্প্রসারণ, যুব সমাজকে ক্ষমতায়ন এবং বুদ্ধের নীতি আদর্শকে তুলে ধরা। সব মিলিয়ে এই এসসিও সম্মেলন ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।