জাপানের কিংবদন্তি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল মঙ্গলবার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা সেখানে হাজির থাকলেও জাপানের প্রবাদপ্রতিম এই নেতার রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যে বিতর্ক পিছু ছাড়ল না। এদিন শেষকৃত্যানুষ্ঠানস্থলের বাইরে শয়ে শয়ে জাপানি নাগরিক বিক্ষোভে উত্তাল হলেন। তাঁদের মধ্যে একজন গায়ে আগুন দিয়ে আত্মাহুতি দেওয়ার চেষ্টা করেন। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে বিক্ষোভকারীদের।
তাঁদের দাবি, আবের হত্যা দুঃখের হলেও কোটি কোটি ইয়েন (জাপানি মুদ্রা) খরচ করে এই রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য অর্থের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। যখন আবে-পরবর্তী দেশ প্রবল আর্থিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বাজারে আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দরুন নাগরিকদের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
জাপানের রাজধানী টোকিওর বুদোকান হলে ৫৫ বছর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কোনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় এদিন। ১৯টি তোপধ্বনিতে ফুলে ঢাকা শিনজো আবের চিতাভস্মের প্রতি বিনত শ্রদ্ধা জানান মোদি। আবেকে ভারতবন্ধু বলে আখ্যা দিয়ে মোদি বলেন, তিনি লাখো মানুষের অন্তরে বাস করবেন। আবে ভারত-জাপান বন্ধুত্বে বিশ্বাস করতেন। এক মহান নেতা ছিলেন শিনজো।
এই অনুষ্ঠানের ফাঁকেই মোদি জাপানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনার পর মোদি বলেন, দুদেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে তিনি আশাবাদী। শিনজোর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস সহ বহু গণ্যমান্য রাষ্ট্রনেতারা হাজির ছিলেন।
টোকিওর নিপ্পন বুদোকান হলে প্রায় ৪৩০০ অতিথি এই অনুষ্ঠানে ছিলেন। আবের চিতাভস্ম সেখানে নিয়ে আসেন তাঁর স্ত্রী। বিদেশি অতিথিদের নিরাপত্তায় প্রায় ২০ হাজার নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হলেও বিক্ষোভ এড়ানো সম্ভব হয়নি। অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে সকাল থেকেই হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছিলেন এত ব্যয়বহুল শেষকৃত্যের প্রতিবাদে।
একদিকে যখন শয়ে শয়ে জনতা নিহত প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন, ঠিক তখনই হলের বাইরে প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাজির ছিলেন বিক্ষোভকারীরা। বেশ কয়েক জায়গায় তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ছিল, দেশে যখন চরম আর্থিক দুর্দশা চলছে তখন ১ কোটি ২০ লক্ষ ডলার খরচ করে লোকদেখানো এই বিলাসের কী প্রয়োজন ছিল?