নিউ ইয়র্ক: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পিছনের আয়নার দিকে তাকিয়ে ভারতের গাড়ি চালাচ্ছেন। ফলে, তাঁর গাড়িতে ধাক্কা তো লাগবেই। ফের প্রধানমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ রাহুল গান্ধীর। তিনি বলেন, কই আমরা তো কখনও কোনও বিপর্যয়ের জন্য ব্রিটিশের ঘাড় দোষ চাপাইনি! কিন্তু, ভারতে এখন যা কিছু ঘটছে, তার জন্য বিজেপি ৫০ বছর আগে কংগ্রেসের আমলে কী হয়েছে, তার উপর দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে। নিজেদের দায় এড়িয়ে যাচ্ছে।
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর চলতি আমেরিকা সফর দেশের রাজনীতিতে এক চর্চিত বিষয় হয়ে উঠেছে। লন্ডন সফরের মতো এবারেও রাহুল বিদেশের মাটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি সরকারকে ক্রমাগত সমালোচনার শর-জর্জরিত করে চলেছেন। সোমবার (৫ জুন) এক অনুষ্ঠানে তিনি মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য কাঠগড়ায় তোলেন। নিউ ইয়র্কে ভারতীয় অভিবাসীদের এক অনুষ্ঠানে রাহুলের অভিযোগ, বিজেপি চিরকাল দায় এড়াতে অতীতে কী হয়েছিল, তার গল্প ফাঁদে।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee | আজ থেকে চারদিনের দার্জিলিং সফরে মমতা
গান্ধী পরিবারের ‘রাজপুত্র’ বলেন, আপনি বিজেপিদের কোনও প্রশ্ন করে দেখুন! ওরা সবসময় পিছন ফিরে তাকিয়ে উত্তর দেবে। দায় এড়াতে অনেক আগে কী হয়েছিল সেই যুক্তির জাল ফাঁদবে। জিজ্ঞাসা করুন ট্রেন দুর্ঘটনা কেন ঘটল? বিজেপি উত্তর দেবে, ৫০ বছর আগে কংগ্রেসের আমলেও হয়েছিল। ওদের তাৎক্ষণিক জবাব আসবে, পিছে দেখো। বিজেপি এবং আরএসএসকে এক আসনে বসিয়ে রাহুলের দাবি, স্মৃতিচারণা করেই ওরা বর্তমানের অপদার্থতার দায় এড়াতে চায়।
একইসঙ্গে রাহুল গান্ধী কংগ্রেস জমানার এক রেল দুর্ঘটনারও দৃষ্টান্ত টেনে আনেন। এবং বলেন, ওই দুর্ঘটনার পরপরই তৎকালীন রেলমন্ত্রী নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন। তাঁর দল দায়িত্ব নিয়ে কোনওদিন পিছপা হয়নি। প্রসঙ্গত, ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনার পর বিরোধী দলগুলি বিজেপির রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের ইস্তফার দাবি তুললেও তিনি পদত্যাগ করেননি কিংবা তাঁর মন্ত্রক বদল করেননি প্রধানমন্ত্রী মোদি।
রাহুল ঠাট্টার ছলে বলেন, আমার মনে আছে কংগ্রেস জমানাতেও একটা ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু আমাদের সরকার বলেনি যে, এটা পূর্বতন ব্রিটিশ সরকারের জন্য হয়েছে। কংগ্রেসের মন্ত্রী বলেছিলেন, এটা আমার দায়িত্ব। আমি সেই দায়িত্ব মাথা পেতে নিয়ে পদত্যাগ করছি। আর এখন দায়িত্ব না নিয়ে অজুহাত খাড়া করা হচ্ছে।
বিজেপি এবং আরএসএসের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে রাহুল বলেন, এখন দেশে দুটি লোকের মধ্যে লড়াই চলছে। একজন হলেন জাতির জনক গান্ধীজি। তাঁর মতাদর্শ। অন্যজন হলেন নাথুরাম গডসে। এই মানুষগুলো দেশে ঘৃণা ছড়ানোর কাজ করছে। আর এই মানুষগুলোই গণতন্ত্রের সব স্তম্ভ ও প্রতিষ্ঠানকে দখল করে নিয়েছে।