কলকাতা: পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) একা হাতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছেন বলে আদালতে দাবি করল ইডি। বৃহস্পতিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে পার্থর জামিন মামলার শুনানি ছিল। শুনানিতে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, পার্থ অত্যন্ত প্রভাবশালী। তাই তাঁর কোনও মতেই জামিন পাওয়া উচিত নয়। আদালত পার্থর জামিনের (Bail) আবেদন খারিজ করে দেয়।
কার্যত ইডির প্রভাবশালী তত্ত্বেই ফের খারিজ হয়ে যায় পার্থর জামিনের আবেদন। ইডির আইনজীবী এদিন জামিনের বিরোধিতায় পাঁচ তত্ত্ব হাজির করেন। এডুলজি বলেন, ২৩ জুলাই মাঝরাতে পার্থকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারির পর তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ফোন ধরেননি। প্রভাবশালী বলেই পার্থ মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি ফোন করার সাহস দেখাতে পেরেছেন।
ইডির আইনজীবী বলেন, গ্রেফতারি মেমোতে পার্থকে মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয় বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এতেও বোঝা যায়, পার্থ কতটা প্রভাবশালী। এডুলজি বলেন, গ্রেফতারির পর পার্থ অসুস্থতার অজুহাতে এসএসকেএম হাসপাতাল ভর্তি হন। কিন্তু আদতে তিনি অসুস্থ ছিলেন না। হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁকে ভুবনেশ্বর এইমসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা পার্থর কোনও অসুস্থতা খুঁজে পাননি। ইডির দাবি, গ্রেফতারি এড়াতে তিনি অসুস্থতার নাটক করেছিলেন। কেন্দ্রীয় সংস্থার আরও দাবি, প্রভাবশালী বলেই পার্থ সহজে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যেতে পেরেছিলেন।
ইডির সওয়ালে উঠে আসে জেলে পার্থর আংটি পরার প্রসঙ্গও। তাদের দাবি, প্রভাবশালী বলেই জেল কর্তৃপক্ষের মদতে জেলে আংটি পরে থাকতেন। পরে আদালতের ধমক খেয়ে জেল কর্তৃপক্ষ তাঁকে আংটি খুলতে বাধ্য হতে হয়।
আরও পড়ুন: Kalighater Kaku | ED | হার্টের সমস্যা দেখিয়ে জামিনের আর্জি কালীঘাটের কাকুর
এডুলজি আরও অভিযোগ করেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একা হাতে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছেন। আর এই কাজে তাঁকে আরও বেশ কয়েকজন সরকারি অফিসার সাহায্য করেন। ইডি আদালতে আরও জানায়, পার্থকে আদালতে হাজির করা হয় আলাদা গাড়িতে। অথচ অন্য বন্দিদের হাজির করানো হয় প্রিজন ভ্যানে। প্রভাবশালী বলেই তিনি এই বাড়তি সুবিধা পান।
গত সোমবার পার্থকে আলিপুরে বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। আদালতে ঢোকার মুখে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বিনা বিচারে এক বছর ধরে জেল খাটছি। কোথায় সুজাত ভদ্রদের বন্দিমুক্তি কমিটি। আমাকে জোর করে বিনা বিচারে আটকে রাখা হয়েছে। আমি নির্দোষ। জেল থেকে বেরতে চাই। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব। নির্দোষ প্রমাণ করতে গেলে যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দরকার, আমি সেটা চাই। পার্থর এই বক্তব্যকে সামনে রেখেও ইডির দাবি, প্রভাবশালী বলেই তিনি এসব কথা বলতে পেরেছেন।