প্যারিস: নব্য নাৎসিদের এক মিছিলকে অনুমতি দিয়ে নিন্দার মুখে ফরাসি সরকার। গত সপ্তাহের শনিবার রাজধানী প্যারিসের বুকে প্রায় শ’ছয়েক অতি উগ্র গোষ্ঠীর নব্য নাৎসিদের একটি মিছিল বের হয়। প্যারিস পুলিশ সেই মিছিলকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যায়। অথচ, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার পেনশনের দাবিতে একটি প্রতিবাদ মিছিল ও সভাকে অনুমতি দেয়নি। যাকে কেন্দ্র করে কাঠগড়ায় ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানি। সোশালিস্ট সেনেটর ডেভিড অ্যাসোলিনে মন্ত্রীর কাছে এর ব্যাখ্যা দাবি করেছেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী কিছু উগ্রবাদী, রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জন্ম হয় নব্য নাৎসিবাদের। তাদের দাবি, নাৎসিবাদের পুনর্জন্ম এবং পুনঃপ্রতিষ্ঠা। জাতিঘৃণা এবং বিশুদ্ধ শ্বেতাঙ্গবাদী এই গোষ্ঠীর সমর্থকরা জাতি ও সংখ্যালঘুদের উপর ক্ষমতা বিস্তারের পক্ষপাতী। শুধু জার্মানি বা ফ্রান্স নয়, এটা গোটা বিশ্বের সমস্যা। এরা হিটলারের থার্ড রাইখ পরবর্তী ফোর্থ রাইখের দিশারী। নব্য নাৎসিবাদ হিটলারের স্বস্তিক চিহ্নও ব্যবহার করে। ইউরোপীয় এবং কিছু লাতিন আমেরিকার দেশে নব্য নাৎসিবাদ নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। বিশেষত জার্মানিতে।
আরও পড়ুন: Karnataka Assembly Election | কাল মহারণ কর্নাটকে, প্রচারে এগিয়ে বিজেপি, জনমত ‘হাতে’
শনিবার নব্য নাৎসিদের একটি গোষ্ঠী কালো পোশাক পরে মিছিল করে। অথচ, প্রশাসন সরকার বিরোধী আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। তারা এর প্রতিবাদে বাসন বাজিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। নব্য নাৎসিরা ১৯৯৪ সালে নাৎসিবাদের সমর্থক সেবাস্তিয়ান দেইজিয়ুর মৃত্যুদিবস উপলক্ষে মিছিল বের করেছিল। পুলিশকে দেখা যায়, সেই মিছিলকে পাহারা দিয়ে নিরাপদে নিয়ে যেতে। এরই প্রতিবাদে সোশালিস্ট সেনেটর টুইটে লেখেন, প্যারিসের বুকে নব্য নাৎসিদের এই মিছিলকে অনুমতি দেওয়া, মেনে নেওয়া যায় না। ওদের সংগঠন, ওদের আদর্শ, স্লোগান সবই জাতিগত ঘৃণা ছড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার, ৮ মে, ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির জয় পালনে ফ্রান্স নাৎসি-বিরোধী দিবস হিসেবে পালন করে। তাই প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবী জ্যাকুইস আত্তালি এই মিছিলকে ‘সহ্য করা যায় না’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র ইয়ান ব্রোসাত মশকরা করে বলেন, সেনাবাহিনীর বুটের আওয়াজের থেকে সসপ্যানের ঝঙ্কার বিপজ্জনক মনে হয়েছে সরকারের কাছে। ফরাসি বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদের পরম্পরা হিসেবে বাসন বাজিয়ে সরকারের কানে তাঁদের দাবি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সরকার সম্প্রতি পেনশন নীতির সংস্কার করে অবসরের বয়স ৬২ বছর থেকে ৬৪ বছর করে। যার বিরুদ্ধেই এই প্রতিবাদ।