কাবুল: পঞ্জশির এলাকায় তুমুল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের খবর মিলিছে৷ পঞ্জশিরে ৩০০-রও বেশি তালিবান নিহত হয়েছে৷ দাবি মাসুদ শিবিরের। সোমবার নর্দান অ্যালায়েন্সের প্রতিরোধে পঞ্জশিরে ঢুকতে ব্যর্থ হয় তালিবান। তাই, তালিবানরা পঞ্জশিরের বহু শিশুকে পণবন্দির করেছে৷ এ দিকে আহমদ মাসুদ বলেছেন, কখনোই পঞ্জশির প্রদেশ কারও হাতে তুলে দেব না৷ প্রয়োজনে কথা বলতে রাজি আছি৷ একই সঙ্গে যুদ্ধের জন্যেও প্রস্তুত আছি৷
তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ সোমবার আফগান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা পঞ্জশির ঘিরে ফেলেছি।’ অন্যদিকে আবার তালিবান বিরোধী জোটের সামরিক নেতা আহমেদ মাসুদের শিবির সোমবার দাবি করেছে, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় পঞ্জশিরমুখী তালিবান বাহিনীর উপর ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে মোট ৩০০ জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে।’
রবিবার শয়ে শয়ে তালিবান হিন্দুকুশ পর্বতমালার দিকে রওনা দেয়৷ সেই দুর্গম পর্বতমালার মাঝে রয়েছে পঞ্জশির৷ আফগানিস্তানের অধিকাংশ এলাকা দখলে এলেও পঞ্জশির তালিবানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে৷ এমনকী নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে যখন আফগানিস্তানে তালিবানদের রাজত্ব ছিল তখনও ‘স্বতন্ত্র’ ছিল পঞ্জশির৷
১৫ অগস্ট কাবুলের পতনের পর তালিবান চেষ্টা করে পঞ্জশিরেও আধিপত্য কায়েম করার৷ কিন্তু বশ্যতা স্বীকার করেননি পঞ্জশিরের যোদ্ধারা৷ তালিব জঙ্গিদের খেদিয়ে দেয় তারা৷ তারই বদলা নিতে এবার কোমর বেঁধে নামল তালিবান৷ পঞ্জশির দখলে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তারা৷ অত্যাধুনিক অস্ত্র-সমেত শয়ে শয়ে তালিবান জঙ্গিদের পঞ্জশির দখলে পাঠিয়েছে তারা৷
শত্রুকে স্বাগত জানাতে তৈরি প্রতিরোধী বাহিনীও৷ দেশের তদারকি প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ জানিয়েছেন, তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা প্রস্তুত৷ সোমবার সকালে টুইটে তিনি বলেন, ‘এর আগের দিন আন্দারাব উপত্যকায় প্রতিরোধের মুখে পরে পিছু হঠেছিল তালিবান৷ তার পর পঞ্জশিরে ঢোকার মুখে দাঁড়িয়ে তালিবানের বিরাট সংখ্যক যোদ্ধা জড়ো হয়েছে৷’
প্রতিরোধ বাহিনীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ‘পঞ্জশিরের সিংহ’ বলে খ্যাত প্রয়াত আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমেদ মাসুদ৷ সালেহ এবং মাসুদ দু’জনেই ‘কসম’ খেয়েছেন তালিবানকে এখানে ঢুকতে দেওয়া যাবে না৷ তালিবানকে আটকাতে তৈরি তাদের ৬ হাজার যোদ্ধা৷ আফগান সেনা, স্পেশাল ফোর্স এবং স্থানীয় জনজাতির মানুষদের নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রতিরোধ বাহিনী৷ এর আগের দিন মাসুদ জানিয়েছিলেন, রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে৷ কিন্তু তালিবানের কাছে মাথা নত করবে না তারা৷