কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) পর সুপ্রিম কোর্টেও ধাক্কা খেল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। পঞ্চায়েত ভোটে কমিশনের খবরদারি করার প্রয়াস ঠিক ছিল না। সেই দায়িত্ব শুধুমাত্র রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। এমনটাই জানাল সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালত অবশ্য বলেছে, কমিশনের উদ্দেশ্য খারাপ ছিল না। কারণ তারা নির্বাচনী হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যব্যাপী পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে চেয়েছিল। তবে সেই প্রচেষ্টা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের স্বশাসন ও স্বাধীনতার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারত।
আরও পড়ুন: স্বপ্নদীপের মৃত্যু, আটক যাদবপুরের প্রাক্তনী
পঞ্চায়েত ভোটের আগেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে চেয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিল। তারা কমিশনের কাছে স্পর্শকাতর এলাকার তালিকাও চেয়ে পাঠিয়েছিল। বলা হয়েছিল, কমিশন ওই সব একালায় পর্যবেক্ষক পাঠাবে হিংসা রুখতে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকার তাতে আপত্তি জানায়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্টের একক এবং ডিভিশন বেঞ্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আবেদন খারিজ করে দেয়। তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কমিশন।
শীর্ষ আদালত সেই মামলারই শুনানিতে বলে, পঞ্চায়েত ভোটে কমিশন খবরদারি চালাতে চেয়েছিল। কমিশনের এই পদক্ষেপ সঠিক ছিল না। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকা সম্পর্কে তৃণমূল সরকারের ক্ষোভ রয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোট পরবরর্তী হিংসা খতিয়ে দেখার জন্য তারা প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিল। উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়ে ওই প্রতিনিধিরা কোথাও কোথাও শাসকদলের সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখেও পড়েন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, রাজ্য প্রশাসন প্রতিনিধিদের সহযোগিতা করেনি।
তৃণমূলের বিভিন্ন সভায়, এমনকী সরকারি অনুষ্ঠানেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বারবারই বলেন, বাংলায় কুকুর মরলেও, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন টিম পাঠায়। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে খুন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন হলে তো, টিম পাঠাতে দেখি না। তিনি আরও বলেন, এই যে তিনি মাস ধরে মণিপুর জ্বলছে, মহিলাদের বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয়েছে, ধর্ষণ করা হয়েছে। সেখানে কটা কমিশন পাঠানো হয়েছে?