ক্যানিং: রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হওয়া দরকার। ক্যানিং থেকে ফের হিংসা নিয়ে কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (Governor C V Anand Bose)। সোমবার কোচবিহার থেকে কলকাতা পৌঁছে রাজভবন যাননি তিনি। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রাজ্যপাল সোজা চলে যান দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে। সেখানে হিংসায় মৃত তৃণমূল নেতার মেয়ের সেচ দফতরের ভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রাজ্যপালের পা জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদলেন তৃণমূল নেতার মেয়ে।সে জানায়, রাজ্য পুলিশের উপর তাঁর আস্থা নেই। তিনি চান সিবিআই তদন্ত।
শনিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে খুন হয়েছেন যুব তৃণমূল কর্মী জিয়ারুল মোল্লা। সেই খবর বরিবারই পান বোস। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস আবার এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বাসন্তিতে যান। যেখানে জিয়ারুল খুন হয়েছেন সেই এলাকায় পরিদর্শন করার পাশাপাশি এলাকার গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলার পরে নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে না গেলেও পরে নিহত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সদস্যদের ক্যানিংয়ে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল। সেই মতো নিহত তৃণমূলকর্মী মেয়ে ক্যানিংয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে আসে। মৃত ওই তৃণমূল কর্মী জিয়ারুলের পরিবারকে ৪০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দেন বোস। নিহত তৃণমূল কর্মীর মেয়ে। তিনি পুলিশ প্রশাসন এবং দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। মেয়ের দাবি, দলের লোকজন তাঁর বাবাকে চাপ দিত রাজনীতি ছাড়ার জন্য। শনিবারই তাঁর বাবাকে খুন করা হয়। তৃণমূল নেতার মেয়ে জানায় রাজ্য পুলিশে তাদের আস্থা নেই, বাবার খুনের সিবিআই তদন্তের দাবি করে।
আরও পড়ুন: Sharad Pawar | ভাঙনের খেলার মূল কারিগর মোদি, অভিযোগ পাওয়ারের
পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কাল থেকেই রাজ্যজুড়ে অশান্তি ছড়িয়েছে। গত ২৪ দিনে রাজ্যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রথম থেকেই হিংসার ঘটনায় সরব রাজ্যপাল। তিনি একাধিক জানিয়েছেন, কোনও ভাবে রাজ্যে হিংসা বরদাস্ত নয়। এদিনও তাঁকে ফের সরব হতে দেখা যায়। তিনি বলেন, রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হওয়া দরকার। মানুষের রক্ত দিয়ে রাজনৈতিক হোলি খেলা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এলাকায় গিয়ে আমি পরিস্থিতি দেখেছি। কারা অশান্তির পিছনে তার তথ্য আমার কাছে রয়েছে। হিংসার যে আগুন রাজ্যের জেলায় জেলায় ছড়িয়েছে সেই দুঃখজনক অধ্যায় শেষ হওয়া উচিত। কে হিংসা ছড়াচ্ছে, তা আমার কাছে বড় কথা নয়। হিংসায় সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে, এটাই বড় কথা।আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কড়া মন্তব্য করার পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনে ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের উচিত সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করান। ৪৮ ঘণ্টা আমি অপেক্ষা করব। তার মধ্যে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় দেখব।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে অশান্ত ভাঙড়, ক্যানিং পরিদর্শনে আগেই গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এমন কি উত্তরবঙ্গের সফরে গিয়েও কোচবিহারের দিনহাটার অশান্ত এলাকা পরিদর্শনেও যান। সেখানকার নিহতদের পরিবার ও আক্রান্তদের সঙ্গে কথাও বলেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পাহারাদারদের হাতে যেন মৃত্যুঘণ্টা না বাজে। হিংসা পরিবেশ কোনওভাবেই বরদাস্ত নয় সেটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি সব কিছুর উপর নজর রাখছেন। কোনওরকম অব্যবস্থা ও হিংসার বরদাস্ত করা হবে না। শনিবার তিনি বলেন, রাজভবনকে (Raj Bhavan) ভ্রাম্যমান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।