পাটনা: পাটনা মন্ত্রণাসভায় বিজেপি-বিরোধী মঞ্চের মশাল জ্বলে উঠল না। বৈঠক শেষে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এরপর ফের বিরোধীরা মিলিত হবে কংগ্রেস শাসিত হিমাচল প্রদেশের সিমলায়। আগামী জুলাইয়ের মাঝামাঝি সেই বৈঠক বসবে। সিমলা বৈঠকেই বিরোধী দলগুলি আহ্বায়ক নির্বাচন করবে। এদিন সেই কাজও সম্পূর্ণ হয়নি। বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য রাজনীতিতে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বলে জানা গিয়েছে। মমতা বৈঠকে বলেন, সকলকেই বড় মনের পরিচয় দেওয়া উচিত। যদি আমরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করি, তাহলে বিজেপি তার ফায়দা তুলবে। উল্লেখ্য, এর আগেই তৃণমূলনেত্রী বলেছিলেন, যে যেখানে শক্তিশালী সেখানে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী ফর্মুলায় তাদের আসন ছেড়ে দেওয়া উচিত ছোট দলগুলির।
বৈঠকের শেষে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেন, আমাদের আলোচনা খুব ভালো হয়েছে। সকলে একমত হয়েছে। সকলে একজোট হয়ে ভোটে লড়াই করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তবে আরও একটি বৈঠক হবে বিরোধীদের। এখন যারা দেশ চালাচ্ছে তারা ঠিকভাবে দেশ চালাচ্ছে না। দেশের ইতিহাসও বদলে দিচ্ছে।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে সাংবাদিকদের সামনে বলেন, সব দল মিলে ভোটে লড়াই করার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমরা। সিমলায় ১০-১২ জুলাই ফের বৈঠক বসবে। সেখানে চূড়ান্ত কর্মসূচি তৈরি হবে। তিনি বুঝিয়ে দেন, পৃথক পৃথক রাজ্যের রাজনীতি যেহেতু আলাদা, সে ব্যাপারে সকলকে একমতে পৌঁছানোর উপর জোর দেন তিনি। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, বিজেপির আগ্রাসী রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের আদর্শের লড়াই। হতে পারে আমাদের কাজে ভিন্ন ভিন্ন মত থাকবে। কিন্তু আমাদের নমনীয় হতে হবে। তবে আমরা এ ব্যাপারে সকলে একমত হয়েছি যে বিজেপিকে সরাতে সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকব।
বৈঠকে আম আদমি পার্টি দিল্লি অর্ডিন্যান্স নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থান জানতে চেয়েছে। তখন অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের শান্ত করেন মারাঠা স্ট্রংম্যান শারদ পাওয়ার এবং উদ্ধব ঠাকরে। পাওয়ার বলেন, ২৫ বছর ধরে আমরা যে রাজ্যে পরস্পর বিরোধী রাজনীতি করে চলেছি, সেখানেই মহাবিকাশ আঘাড়ি গড়ে উঠেছে। আমরা সরকারও চালিয়েছি। এখনও জোট টিকিয়ে রেখেছি। উদ্ধবও পাওয়ারের কথায় সায় দিয়ে শান্ত হতে বলেন কেজরিওয়ালকে।
পাটনা বৈঠক নিয়ে এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ২০২৪ সালে নরেন্দ্র মোদিই সরকার গঠন করবেন। ৩০০-র বেশি আসনে জিতে বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে। দুদিনের সফরে জম্মুতে এসে অমিত এক জনসভায় আরও বলেন, পাটনায় কতগুলি দল একজোট হয়েছে সেটা কোনও ব্যাপারই নয়। ওরা কোনওদিনই ঐক্যবদ্ধ হতে পারবে না। পাটনায় একজোটের একটা ছবি তুলে ধরার ফটো সেশন চলছে। ওরা প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং এনডিএ-কে চ্যালেঞ্জ দিতে চাইছে। আমি তাদের বলছি, মোদিই ২০২৪-এ সরকার গঠন করবেন।
বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রাহুল গান্ধীর ঠাকুমা লালুপ্রসাদ যাদবকে জেলে ভরেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী ২০ মাস জেলে পুরে রেখেছিলেন নীতীশ কুমারকে। তিনিই পাটনায় রাহুলকে স্বাগত জানালেন। এদিন বুঝলাম রাজনীতিতে কী না হতে পারে!