কলকাতা: শেষ পর্যন্ত রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ইজেডসিসির পুজো উদ্ধোধন করলেন৷ পরে তিনি বলেন, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে সামনে রেখে দুর্গা পুজোর থিম করা হয়েছে৷ যুব মোর্চা ও মহিলা মোর্চার ছেলেমেয়েরা থিম করেছে। ভোট পরবর্তী হিংসায় বহু মানুষ আক্রান্ত, ঘর ছাড়া৷ তাঁদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে৷ তাই, আমরা অনিশ্চয়তায় ছিলাম৷ পুজো করবো কি করবো না৷ হিন্দু ধর্মের নিয়ম নীতি আছে৷ একবার পুজো করলে একই জায়গায় তিনবার পুজো করতে হয়৷ সেই প্রথাকে মান্যতা দিয়ে পুজোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
উদ্বোধন মঞ্চে রাহুল সিনহা, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার প্রমুখ৷ নিজস্ব চিত্র৷
২০২০-তে ভোটের আগে খুব ধুমধাম করে সল্টলেকের ইজেডসিসিতে পুজোর আয়োজন করেছিল রাজ্য বিজেপি। বাংলার বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পর সেই পুজোই হচ্ছে কার্যত ‘নমো নমো’ করে। শাহ-নাড্ডা দূর, পুজোর উদ্বোধনে রাজি নন দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও। ফলে, ভরসা সেই সুকান্তই!
আরও পড়ুন-ন্যূনতম মজুরি-শ্রমবাজার নিয়ে গবেষণার জন্য অর্থনীতিতে নোবেল তিন অধ্যাপককে
পুজোর উদ্বোধন করার জন্য দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে চিঠি পাঠিয়েছিল রাজ্য বিজেপি। সশরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকার জন্য যোগাযোগ করা হয়েছিল দলের অন্যান্য শীর্ষনেতাদের সঙ্গে। নয়াদিল্লির দীনদয়াল মার্গের সদর দফতরেও চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, কারও কাছ থেকেই ইতিবাচক সংকেত মেলেনি।
আরও পড়ুন: ফের ‘ভুয়ো’ ছবি, এ বার ভাইরাল আমেরিকার সংবাদপত্রে মোদির ছবি সহ ‘প্রশস্তি’
ফলে কার্যত তারকাহীন হতে চলেছে বিজেপির পুজো। দলের নীতিতে পুজোর করার রীতি না থাকলেও ২০২০-তে ভোটের প্রাক্কালে বাঙালির আবেগের কথা মাথায় রেখে পুজো করেছিল গেরুয়া শিবির। তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘আপত্তি’ সত্ত্বেও ধুমধাম করে পুজো হয়েছিল। উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন অমিত শাহ। ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিধাননগর পুরসভার প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত একার কাঁধে দায়িত্ব তুলে নেন।
ঢাক বাজাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী ও রাহুল সিনহা৷ নিজস্ব চিত্র৷
বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই পুজো নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। পুজো বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে বিস্তর আলোচনাও হয়েছিল রাজ্য বিজেপির অন্দরে। তার পর দিলীপ ঘোষের জায়গায় রাজ্য সভাপতির আসনে সুকান্ত মজুমদার বসতেই ফের পুজো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। সপ্তাহ খানেক আগে গতবারের মূল উদ্যোক্তা সব্যসাচী দত্ত পাল্টি খেয়ে তৃণমূলে যাওয়ায় বড় ধাক্কা খায় বিজেপি।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ছবি ‘চুরি’, উত্তরপ্রদেশের উন্নয়ন প্রচারে বাংলার ‘মা’-মমতাই ভরসা যোগীর
বিজেপির সাংস্কৃতিক সেলের উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত পুজোর আয়োজনের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। তৃতীয়া-চতুর্থীর মধ্যে রাজ্যের সিংহভাগ পুজো উদ্বোধন হয়ে গেলেও বিজেপির পুজোর প্যান্ডেলের কাজ শেষ হয়েছে রবিবার। পুজো নিয়ে দায়সাড়া কথা শোনা গিয়েছে দিলীপ ঘোষের গলাতেও। পুজোর উদ্বোধনের বিষয়ে দিলীপবাবু বলেছেন, পার্টির প্রেসিডেন্ট আছেন। তিনি করবেন। আমি মেদিনীপুর থাকব। কারা কারা আসছেন, বলতে পারব না। অমিত মালব্য এখানে রয়েছেন।