দিনহাটা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)কোচবিহারে উপস্থিত থাকাকালীন ভোট হিংসায় ফের বলি দিনহাটায়। এ নিয়ে ১১ জনের মৃত্যু হল। মুখ্যমন্ত্রী সোমবারই পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election 2023) প্রচার করেছেন চাঁদমারিতে। তার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই কোচবিহারের (Cooch Behar) দিনহাটা (Dinhata) তৃণমূল-বিজেপি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে (Trinamool-BJP clash) উত্তপ্ত হয়ে উঠল। সংঘর্ষে গুলি চলার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় জখম হয়েছে ৪ জন ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ঘটনায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন জেলা শাসকের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। ভোটের বাংলায় বেলাগাম হিংসা। মনোনয়ন পর্ব থেকেই বারবার শিরোনামে কোচবিহারের দিনহাটা। এবার বাড়িতে ঢুকে গুলি চালানোর অভিযোগ। মঙ্গলবার সকালে দিনহাটা-১ ব্লকের গীতালদহ গ্রামপঞ্চায়েতের জারিধরলা গ্রামের ঘটনা। তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে ঢুকে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় বাবু হক নামে একজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার কারণে তাঁদের কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়।
পঞ্চায়েতের মনোনয়ন পর্ব থেকে কার্যত বোমা-বারুদের স্তূপে পরিণত হয়েছে বাংলা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিনই অশান্তির খবর প্রকাশ্যে আসছে। চলছে গুলি, উদ্ধার হচ্ছে ব্যাগ ভর্তি বোমা। সোমবার রাতেই রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদের জোমকল। মুর্শিদাবাদের ডোমকলে সিপিএম এবং তৃণমূলের সংঘর্ষে চারজন গুলিবিদ্ধ। সোমবার কোচবিহার (Cooch Behar) থেকে মমতা পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা। এবার মানুষের পঞ্চায়েত (Panchayat Election 2023) গড়ার ডাক দিয়েছেন তিনি। ঠিক তারপরের দিনই তৃণমূল বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হেয় উঠল দিনহাটা।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে দিনহাটার জারিদল্লাহ গীতালদহ ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। নিমেষের মধ্যে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। সংঘর্ষের মাঝেই চলে গুলি। ঘটনায় জখম হয় ৫ জন। বাবু হক নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিশের দাবি, গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরেই এই ঘটনা। যদিও শাসকল কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপিকে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ঘটনার জেরে থমথমে এলাকা। আহতদের অভিযোগ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, বিজেপির গুলিতে আহত হয়েছেন তাঁরা।
তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ভোরবেলা এলাকায় ঢুকে তৃণমূলের কর্মীর উপর হামলা চালায়। গুলি চালানো হয় কর্মীদের লক্ষ্য করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক কর্মীর। যদিও শাসক তৃণমূলের আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে পদ্ম শিবির। ওই এলাকা সীমান্তবর্তী, তাই চোরা চালানকারীদের কারবারের চলে সেই নিয়েও গণ্ডগোল হতে পারে। এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। বরাবরই ওই এলাকায় তৃণমূলের সংঘর্ষ লেগেই থাকে।
প্রসঙ্গত, শুধু মুখ্যমন্ত্রী নয় এই রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসও এই সময় উত্তরবঙ্গে রয়েছে। সোমবারই উত্তরবঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের ভোট সন্ত্রাস নিয়ে রাজ্য প্রশাসন ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তিনি বলেছেন, রাজ্যের যেখানে ষেখানে অশান্তি হবে সেই জায়গায় যাবেন। পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশন বেছে রিপোর্ট পাঠাছে। রাজভবনে পাঠানো রিপোর্টের সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।