নয়াদিল্লি: মণিপুর নিয়ে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্টও। সুপ্রিম কোর্ট মনে করে সংসদীয় গণতন্ত্রে এই ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। সর্বোচ্চ আদালত কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারকে দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছে। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা জানাতে বলেছে আদালত। বৃহস্পতিবারই দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়ে দেন, এই মামলাটির শুনানি শুক্রবার হবে। সেখানে সরকারকে জানাতে হবে তারা কী ব্যবস্থা নিল। আজ, সকাল সাড়ে ১০টায় সেই মামলার শুনানি হবে।
বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত বলে, মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটানোর ভাইরাল হওয়া দৃশ্য খুবই মর্মান্তিক ও উদ্বেগের। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তা আদালতকে অবিলম্বে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামানি এবং সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে একথা জানিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, এজন্য সরকারকে কিছু সময় দিতে রাজি হয়েছে আদালত। তবে সরকার যদি উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিতে পারে, তাহলে আদালত পদক্ষেপ করবে বলেও সরকারপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছে বেঞ্চ। শুনানির শুরু থেকেই তাঁদের দুজনকে এজলাসে হাজির থাকার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এই ঘটনায়। আমি মনে করি, এই ঘটনায় এককথায় মেনে নেওয়া যায় না। সরকারের উচিত এই মুহূর্তে পদক্ষেপ করা এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া। জাতিগত হিংসায় নারীকে ব্যবহার করা অত্যন্ত অত্যন্ত উদ্বেগজনক। শুনানি গ্রহণ করে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, দৃশ্যটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে, এটা বড়সড় সাংবিধানিক গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে একমত হন যে, সরকারও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন এবং এ ধরনের ঘটনা কাঙ্ক্ষিত নয়।
বুধবার একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে নৃশংস এক দৃশ্য। যেখানে গণধর্ষিতা দুই মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটাচ্ছে একদল যুবক। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। এর বিরুদ্ধে টুইটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যবস্থা নিতে চলেছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে মণিপুরে হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পরদিন এই ঘটনা ঘটে। কিন্তু গতকাল, বুধবার ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিরোধী দলগুলি মারমুখী হয়ে উঠেছে সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সংসদের অধিবেশন বসার আগে বিরোধী দলগুলির জোট আইএনডিআইএ একটি আলোচনায় বসে। রাজ্যসভার কংগ্রেস দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকা ওই বৈঠকে কংগ্রেস ছাড়াও ১১টি দলের রাজ্যসভার দলনেতারা হাজির ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বৃহস্পতিবার হিংসা ছড়ানোর পর প্রথমবারের জন্য মণিপুর শব্দটি মুখে এনে এই ঘটনার নিন্দা করেন। তিনি বলেন, মণিপুরের ঘটনা গোটা দেশের মাথা লজ্জায় হেঁট করে দিয়েছে।