নয়াদিল্লি: করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express) দুর্ঘটনা নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের সুপ্রিম কোর্টে (Supreme court)। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের আবেদন জানানো হয়েছে। ‘কবচ’ প্রকল্প নিয়ে গাইডলাইন জারির আর্জি জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা জোরদার তা নিয়ে পর্যালোচনার জন্য এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বালেশ্বরে দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতর সংখ্যা হাজারের বেশি। ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় (Train Accident) সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব দিল রেল বোর্ড। রবিবার সন্ধ্যায় এই প্রস্তাবের কথা ঘোষণা করেন খোদ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw)। তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের তরফ থেকে এবং রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের পক্ষ থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য মাথায় রেখেই পরবর্তী তদন্ত সিবিআই (CBI) মারফত হোক, এই সুপারিশ জানাচ্ছে রেল বোর্ড।”
আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident | ওডিশার রেল দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ রেল বোর্ডের
এখন ছবিটা ঠিক যেন মৃত্যুপুরী। ১৬০ জনের দেহ শনাক্ত করা যায়নি। ভুবনেশ্বর এইমসে ১০০ জনের দেহ রাখা হয়েছে। পরিজনেদের কথা ভেবে মৃতদেহের ছবি তুলে ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনাও সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থলে এখনও রয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি কামরা। সেগুলির মধ্যে আরও দেহ আটকে থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না উদ্ধারকারীরা। শনিবার দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সিগন্যালের ত্রুটির কথাই যৌথ রিপোর্টে বলছেন রেল আধিকারিকরা।সিগন্যালিংয়ের সমস্যা নাকি সঠিক সময়ে ব্রেক কষতে না পারা, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন বহু। লাইনে সবুজ সিগন্যাল পাওয়া সত্ত্বেও করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express Accident) কী ভাবে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ ক্ষেত্রে সিগন্যাল দেওয়ায় কোনও গোলমাল হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কার গাফিলতিতে বেঘরে প্রাণ গেল অসহায় মানুষ গুলোর। নিশ্চিন্তের রেল যাত্রা মানুষের শেষ যাত্রা পরিণত।
বেঘরে প্রাণ হারাল অসহায় মানুষগুলো। কত বাবা-মারা সন্তান হারা হল, পরিবারে একমাত্র রোজগেরে মানুষটাকে হারিয়ে শোকের মাঝেই অভাবের চিন্তায় দিশে হারা পরিবারের মানুষজন। করমণ্ডল উস্কে দিল একযুগ আগের জ্ঞানেশ্বরীর স্মৃতিও। ১২ বছর আগে জ্ঞানেশ্বরীর রেল দুর্ঘটনায় বাবাকে হারিয়েছে পৌলমী আজও বাবার মৃত্যুর শংসাপত্র পায়নি সে। আইনি লড়াই লড়তে লড়তে মা গিয়েছে মারা। আজও অসহায় হয়ে কোর্টের ঘুরছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় এত মানুষের মৃত্যু হল, তার দায় কার ? রেলের অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস ‘কবচ’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অধীর চৌধুরীরা (Adhir Ranjan Chowdhury)। গত বছর বাজেট পেশের দিন রেলমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, ক্ষমতাশালী এলএইচবি কোচ তৈরি করা হচ্ছে এবং সমস্ত পুরানো কোচগুলিকে শীঘ্রই এলএইচবি দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হবে। পরিকাঠামোর উন্নতিতে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু সব আশ্বাসই সার ! তার পরেও এড়ানো গেল না ভয়াবহ দুর্ঘটনা।