নয়াদিল্লি: জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সাক্ষাৎ করলেন আমেরিকা, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে। পশ্চিম এশীয় দেশগুলিকে রেলপথে সংযুক্ত করার মার্কিন প্রস্তাবের উপর আলোচনা হয়। শুধু রেলপথে নয়, সমুদ্রপথেও দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলকে যুক্ত করার একটি বিশাল পরিকল্পনা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। এই কাজে ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হবে বলেও আমেরিকা প্রস্তাবে জানিয়েছে।
নয়াদিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সুবিশাল এলাকাকে রেল, সড়ক ও জলপথে সংযুক্ত করার মানচিত্র তৈরি নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনার কথা প্রথম জানা যায় মার্কিন সংবাদ ওয়েবসাইট অ্যাক্সিওস থেকে। যাতে বলা হয়েছে, চীনের প্রভাব থেকে আরবভুক্ত দেশসহ ভারতকে জুড়তে হোয়াইট হাউস এই পরিকল্পনা ফাঁদছে। কারণ, চীনকে মোকাবিলা করতে আমেরিকা এই তাবৎ অঞ্চলের সংযুক্তি চায়। তাহলে কৌশলগত দিক থেকে চীনের থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকা যাবে। কারণ ইতিমধ্যেই চীন ঋণের বোঝা বাড়িয়ে পাকিস্তানকে ম্যানেজ করে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: Kerala Houseboat Tragedy | কেরলে নৌকাডুবি, মৃত ৭ শিশুসহ ২২
ওই সংবাদে বলা হয়েছে, আমেরিকা, সৌদি এবং আমিরশাহির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে ভারতের অজিত দোভালের এই সাক্ষাৎ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পরিকাঠামোর দিক থেকে এই পদক্ষেপ এক মহাযজ্ঞের শামিল। আমেরিকার ইচ্ছা উপসাগরীয় দেশ এবং আরব দেশগুলিকে রেলপথে ও এই সমস্ত দেশকে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রপথে যুক্ত করা। যাতায়াত ও পরিবহণ ব্যবস্থা সুগম হলে তাতে আখেরে আমেরিকাই বাণিজ্য ও যুদ্ধকৌশলগত দিক থেকে লাভবান হবে।
নয়াদিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ভারত বেশ কয়েকটি দিক থেকে লাভের গুড় ঘরে তুলবে। প্রথমত, বেজিং ইতিমধ্যেই আগের গোঁড়ামি ভেঙে পশ্চিম এশীয় অঞ্চলে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছে। ভারত যার নাম দিয়েছে ‘মিশন ক্রিপ’। এই পদক্ষেপে চীন সম্পর্ক গড়ে তুলেছে সৌদি আরব এবং ইরানের সঙ্গে। সেই দিক থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে ভারতের পক্ষে অশোধিত তেল আনা সহজ হয়ে যাবে। যার ফলে দীর্ঘ মেয়াদি ফল হিসেবে জ্বালানির দাম কমতে পারে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভারতের আরও প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ সুফল পাবেন। কারণ আরবভুক্ত দেশগুলিতে বহু ভারতীয় কাজের সূত্রে বসবাস করেন।
দ্বিতীয়ত, রেলপথ ক্ষেত্রে বিশ্ব প্রযুক্তিতে ভারত একটা ব্রান্ড হিসেবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। শ্রীলঙ্কাতে ভারত এরকমই একটি প্রকল্পের বরাত পেয়েছে। এতে করে ভারতের বৈদেশিক অর্থভাণ্ডারও ফুলেফেঁপে উঠতে পারে। শেষোত, পশ্চিমী প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারতের পরিবহণ ব্যবস্থায় প্রধান কাঁটা পাকিস্তান। ইসলামাবাদ তাদের দেশের মাটি দিয়ে ভারতকে পরিবহণ বা অশোধিত তেলের পাইপলাইন বসাতে দিচ্ছে না বহু বছর ধরে। তাই সমুদ্রপথ খুলে গেলে ভারতের পক্ষে সুবিধাই হবে। তাই দিল্লি চাইছে পশ্চিম এশীয় বন্দর যেমন চাবাহার এবং বন্দর-ই-আব্বাস (ইরান), দাকম (ওমান), দুবাই (সংযুক্ত আরব আমিরশাহি), জেড্ডা (সৌদি আরব) এবং কুয়েতে পা ফেলতে। এতে বাণিজ্যদ্বার খুলে যাবে।