কলকাতা: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও বিক্ষোভ করা যাবে না। শুক্রবার এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক ছন্দ ফেরাতে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা করেছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই মামলার প্রেক্ষিতে এ দিন একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
বিশ্বভারতী নিয়ে আদালতের রায়
১) বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনও রকম বিক্ষোভ করা যাবে না। ব্যানার এবং বিক্ষোভের যে সমস্ত আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র রয়েছে, তা সরিয়ে নিতে হবে। এই কাজটি করবে শান্তিনিকেতন পুলিশ স্টেশন।
২) বিশ্বভারতীর ভেতরে যে সমস্ত প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা রয়েছে, সে গুলি শান্তিনিকেতন থানার পুলিশকে ভেঙে দিতে হবে।
৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ মিটারের মধ্যে কোন বিক্ষোভ করা যাবে না।
৪) বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কোনও কর্মী-আধিকারিককে ঢুকতে বাধা দেওয়া যাবে না।
৫) পুরো বিশ্ববিদ্যালয় যাতে সুষ্ঠুভাবে চলে, সে দিকে নজর রাখতে হবে প্রশাসনকে।
৬) বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কোনও রকম মাইকের ব্যবহার করা যাবে না।
৭) উপাচার্যের নিজস্ব নিরাপত্তা ছাড়াও শান্তিনিকেতন থানাকে তিনজন কনস্টেবল নিয়োগ করতে হবে শুক্রবার বেলা ৩ টের মধ্যে।
৮) বিশ্বভারতী এলাকায় সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরাকে কার্যকরী করে তুলতে হবে।
৯) বিশ্বভারতী রেজিস্ট্রার এবং শান্তিনিকেতন থানাকে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে এই নির্দেশ সম্পর্কে রিপোর্ট জমা করতে হবে।
১২ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে আগেই সাসপেন্ড করেছিল বিশ্বভারতী। এছাড়াও অর্থনীতি এবং সংগীত বিভাগের মোট ৩ জন পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সাসপেনশনের মেয়াদ বর্ধিত করা হয়। সম্প্রতি তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ারা। গত শুক্রবার থেকে ছাত্র আন্দোলন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। দফায় দফায় চলছে বিক্ষোভ। ৭ দিন ধরে একটানা ছাত্র আন্দোলনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে (Calcutta High Court) জারি অচলাবস্থা। উপাচার্যের বাড়ির সামনে অবস্থান মঞ্চ তৈরি করে ঘেরাও আন্দোলন চালানো হচ্ছে।
ঠিকমতো খাবার পাচ্ছেন না বলে প্রধানমন্ত্রী তথা আচার্য নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এর পর উপাচার্যকে খাদ্য সরবরাহ করে আন্দোলনকারীরা। এরই মাঝে বৃহস্পতিবার রাতে উপাচার্য ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়েন। বোলপুরের এসডিপিও’র নেতৃত্বাধীন মেডিক্যাল টিম উপাচার্যকে দেখতে আসলে তাদের ফিরিয়ে দেন উপাচার্য।