কলকাতা: ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে কোনও গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সোমবার কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের দুই ডেপুটি কমিশনার রাজ্য নির্বাচন আধিকারিককদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই দুই কমিশনার জানিয়ে দিয়েছেন, কমিশনের সমস্ত নিয়ম সকলকেই অক্ষরে অক্ষরে মানতে হবে। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক এবং জেলার নির্বাচনী আধিকারিকরাও।
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে বলা হয়েছে, যে ভতার তালিকাকে সামনে রেখে আগামী বছর লোকসভা ভোট হবে, তা যেন ১০০ শতাংশ নির্ভুল থাকে। ভোটার তালিকায় কোনও মৃত ব্যক্তির নাম যাতে না থাকে, সেই ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। ভোটার তালিকায় কোনওরকম কারচুপি করা চলবে না। নতুন ভোটারদের নাম তোলার ক্ষেত্রে সমস্ত নথি খতিয়ে দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনও শৈথিল্য বরদাস্ত করা হবে না।
আরও পড়ুন: পুজোয় কোথায় কত ভিড় আগাম জানাতে কলকাতা পুলিশের নয়া উদ্যোগ
বৈঠকে আরও বলা হয়েছে, ১ নভেম্বর যে ভোটার তালিকা এবং আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে, তা নিয়ে যেন কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি অভিযোগ জানাতে না পারে। এর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে সতর্ক থাকতে হবে। কমিশনের নিয়ম মেনেই বুথ তৈরি করতে হবে। বুথে পানীয় জল, শৌচাগার, বসার জায়গা, মাথার উপর ছাওনির ব্যবস্থা করতে হবে।
২০২১ সালের বৈঠকে দুই কমিশনারের কড়া সতর্কবার্তা, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট থেকে শুরু করে অতি সাম্প্রতিক ধূপগুড়ির উপনির্বাচনের যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে, লোকসভা ভোটে তাঁর যেন কোনও পুনরাবৃত্তি না ঘটে। জেলা শাসকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পরেই বিভিন্ন জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে আসবে। তাদের ব্যবহার করার বিষয়ে কমিশনের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
কমিশনের পর্যবেক্ষণ হল, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এতদিন পর্যন্ত তাদের বিভিন্ন নির্দেশ রাজ্য সরকার এবং জেলা প্রশাসন সম্পূর্ণ মানেনি। লোকসভা ভোটে কমিশনের সমস্ত নির্দেশিকা যে মেনে চলতে হবে, তা সোমবারের বৈঠকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের নির্বাচনী অফিসারদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে সমস্ত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, কমিশনের কাছে তার সমস্ত তথ্য রয়েছে। লোকসভা ভোটে সেই ছবি যেন দেখা না যায়। যাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে, এখন থেকেই তাঁদের গতিবিধির উপর জেলা প্রশাসনকে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষ যাতে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নির্বিঘ্নে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করাই প্রশাসনের অগ্রাধিকার। সেই ব্যাপারে রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকদের সচেতন থাকতে হবে।