ওয়াশিংটন: ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার পর থেকে আজ পর্যন্ত দেশের মাটিতে একবারও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। কিন্তু মার্কিন মুলুকে প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই হল তাঁকে। অবধারিতভাবে সেই প্রশ্নমালায় উঠে এসেছিল সংখ্যালঘুদের অধিকার (Minority Right), স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার (Freedom of Speech) এবং গণতন্ত্র (Democracy) রক্ষার প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রী বলে দিলেন, ভারতে কোনও রকম ভেদাভেদ নেই।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের (Joe Biden) সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মোদি। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার উন্নীত করতে তিনি কী করবেন। উত্তরে তিনি বলেন, আমি আপনার কথায় অবাক হলাম। আমরা গণতান্ত্রিক। আমাদের আত্মা, রক্তের অংশ গণতন্ত্র এবং এটা আমাদের সংবিধানেই আছে। যদি মানবিক মূল্যবোধ এবং মানবাধিকার না থাকে তাহলে গণতন্ত্রও নেই। আমরা গণতন্ত্রে বাঁচি, কোনও রকম বৈষম্যের প্রশ্ন নেই।
অর্থাৎ ঘুরিয়ে উত্তর দিয়ে আসল প্রশ্ন এড়িয়েই গেলেন প্রধানমন্ত্রী। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’ উদ্ধৃত করে তিনি বললেন, পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে জাতি ধর্ম বর্ণে কোনও বৈষম্য করে না তার সরকার। প্রসঙ্গত, মার্কিন কংগ্রেসের ভাষণ বয়কট করেন সে দেশের তিন সাংসদ ইলহান ওমর, রাশিদা তালেব এবং আলেকজান্দ্রিয়া অকাসিয়ো-কর্তেজ। ভারতে সংখ্যালঘুদের দমন করে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
Your warm welcome is highly appreciated @SpeakerMcCarthy. Eager to enhance our bilateral cooperation, fostering an even stronger bond between our countries. https://t.co/qq7ItEpaUS
— Narendra Modi (@narendramodi) June 23, 2023
এদিকে হোয়াইট হাউসে দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকের আগে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা (Barack Obama) বলেছিলেন, আমার যদি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে কথোপকথন হত তাহলে আমার বক্তব্যের একটা অংশ থাকত এই যে, আপনি যদি সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত না করেন তাহলে জোরালো সম্ভাবনা আছে একটা সময় ভারত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ওবামা আরও বলেন, যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তবে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে মুসলিম সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা অবশ্যই উল্লেখ করার মতো বিষয়।
এদিকে ভারতের সংখ্যালঘু প্রসঙ্গে তাঁর নিজের দলের সদস্যদের সমালোচনা নিয়ে মেপে উত্তর দিলেন বাইডেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মূল্যবোধ নিয়ে আমার আর প্রধানমন্ত্রীর (মোদি) সন্তোষজনক কথোপকথন হয়েছে। আমাদের সম্পর্ক এরকমই— আমরা একে অপরকে শ্রদ্ধা করি, একে অপরের সঙ্গে খোলখুলি কথা বলতে পারি। দুটো দেশই গণতান্ত্রিক, আমেরিকার ডিএনএ-তে রয়েছে গণতন্ত্র, আমার বিশ্বাস ভারতের ডিএনএ-তেও আছে। আমাদের দুই দেশই গণতন্ত্র রক্ষা করে যাক তা চায় গোটা পৃথিবী।