পাটনা: জার্সি বদলে বিহারে ফের মুখ্যমন্ত্রী পদেই টিকে থাকছেন নীতীশ কুমার। কংগ্রেস টিটকারি মেরে গিরগিটি, আয়া রাম, গয়া রাম বললেও রবিবার খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘গ্যারান্টি’ পাওয়ার পরেই ইস্তফা দেন নীতীশ কুমার। এই অবস্থায় আগের বিজেপি-জেডিইউ সরকারের ছাঁচেই দুজন গেরুয়া উপমুখ্যমন্ত্রী নিয়ে সরকার গঠন হবে পাটলিপুত্রে। এখন জল্পনার সাগর উথলে পড়ছে যে, কোন দুজনের ভাগ্যে নাচছে ওই দুই কুর্সি।
আরও পড়ুন: রাহুলের ফের যাত্রা শুরু আজ, নীতীশকে গিরগিটি বলল কংগ্রেস
পাটলিপুত্রে পালটি-রাজনীতির সূত্রপাত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জননায়ক কর্পূরী ঠাকুরকে ভারতরত্ন দেওয়ার পর থেকেই। এ নিয়ে মোদি কর্পূরী ঠাকুরের ছেলে রামনাথ ঠাকুরকে ফোন করেন। কিন্তু, নীতীশকে ফোন না করায় তিনি অভিমানও করেছিলেন। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পালটি খাওয়ার স্রোতে জোয়ার আসে আজ, রবিবার সকালে। সূত্রে জানা গিয়েছে, খোদ মোদি আশ্বস্ত করেন নীতীশকে। ফোনের পরেই দুই ঘনিষ্ঠ নেতাকে নিয়ে ইস্তফা দিতে রাজভবনে হাজির হন নীতীশ কুমার।
মোদির গ্যারান্টি কেন চাইছিলেন নীতীশ?
প্রথমত, নীতীশ কুমারের প্রথম অঙ্কটি ছিল তিনি দলের কাছে একটি বার্তা দিয়ে চাইছিলেন। সেটা হল, খোদ প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ফোন করে আশ্বস্ত করেছেন। রাজ্য নেতাদের কোনও ভূমিকাই যেন এখানে নেই। থাকলেও মোদি তাঁকে ফোন করে জোট নিয়ে এবং মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। সুতরাং, ভবিষ্যতে জোট টিকিয়ে রাখার উত্তর-দায়িত্ব মোদিরও থেকে যাবে।
দ্বিতীয়ত, রাজ্য বিজেপি নেতাদের কাছেও নীতীশ কুমার বোঝাতে চেয়েছেন, তোমরা নও, আমার লেভেল দিল্লি পর্যন্ত। মোদি-শাহের সঙ্গে আমার কিংবা আমাদের সরাসরি কথা হয়েছে। ফলে রাজ্য বিজেপি নেতারা যেন সমঝে কথা বলেন। কারণ, এর আগে নীতীশ কুমারের বিজেপির সঙ্গত্যাগের কারণই ছিল রাজ্য নেতারা তাঁর সমালোচনায় সরব ছিলেন।
বিজেপির উপমুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার কারা?
সম্রাট চৌধুরী
বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বিহারের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিনোদ তাওড়ে জানান, বিধান পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হয়েছেন সম্রাট চৌধুরী। আগের বিজেপি-জেডিইউ সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী তারকেশ্বর প্রসাদ বলেন, সম্রাট চৌধুরী এবং বিজয়কুমার সিনহা উপমুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার।
প্রসঙ্গত, আগের সরকারে বিজেপির দুই উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তারকেশ্বর প্রসাদ এবং রেণু দেবী। ফলে এবারে নতুন মুখ আসতে চলেছে বলেই দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সম্রাট চৌধুরী পিছড়েবর্গ কুশওয়াহা শ্রেণির নেতা। রাজ্যের বিধান পরিষদের দলনেতা তিনি। রাজ্য সভাপতিও সম্রাট চৌধুরী।
বিজয়কুমার সিনহা
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন। লক্ষ্মীসরাই থেকে গত ২০১০ সাল থেকে জিতে বিধায়ক হয়ে আসছেন। বিধানসভার স্পিকারও হয়েছিলেন। ভূমিহার সম্প্রদায়ের নেতা বিজয় সিনহা একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার।
এছাড়াও, সুশীলকুমার মোদি, তারকেশ্বর প্রসাদ এবং রেণু দেবীও উপমুখ্যমন্ত্রীর লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে দলের আভাস যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে, এবারে দুটি নতুন মুখকে নীতীশের ডেপুটি করতে চলেছে দিল্লির নেতৃত্ব।
অন্য খবর দেখুন