ভাঙড়: ভোট গণনার (Counting) রাতে মুড়ি মুড়কির মতো বোমাবাজিতে আইএসএফ (ISF) তৃণমূলের (TMC) সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড় (Bhangar)। রাতভর এলাকায় চলেছে বোমাবাজি, অস্ত্র হাতে দাপাদাপি। গণনার রাতেই সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার এই ঘটনায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি (Nausad Siddique) সিবিআই (CBI) তদন্তের (Investigation) দাবি জানিয়েছেন। নওশাদ বলেন, আইএসএফকে শাসক ভয় পেয়েছে। তাই তাদের উপর মিথ্যা মামলা সহ অত্যাচার নামিয়ে এনেছে। তাদের প্রার্থী জয়লাভ করলেও তাকে রাত ১২ টা পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয় কেন? কেন আরাবুল বেড়িয়ে যাওয়ার পর ও রাতে আবার তার সশস্ত্র
বাহিনী নিয়ে ফিরে এসে কীভাবে বুথে ঢোকে ও আমাদের প্রার্থী সহ কর্মীদের মারধোর করে। দ্বিতীয়বার কেন আরাবুলকে অনুমোদন করা হলো?
কেন সাড়ে তিনটে পর্যন্ত গণনা কেন্দ্রে বিদ্যুৎ ছিল না বা কেন জেনারেটর চালানো হলো না? ৩ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেলেও আরও বেশ কয়েকটি মৃতদেহ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হবে।
রাত থেকে উত্তপ্ত ভাঙড়ে আইএসএফের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ হয়। পুলিশকে লক্ষ করে বোমা ছোড়া হয়। বুধবার দিনভর এই ঘটনায় থমথমে ভাঙড়। রাস্তায় ছড়িয়ে বোমার চিহ্ন। জায়গা জায়গায় চলছে নাকা চেকিং। চলেছে তল্লাশি। অশান্তি আটকাতে কড়া প্রশাসন। ঘটনায় রণক্ষত্রের চেহারা নেয় ভাঙড়। গণনাকেন্দ্রে আটকে পড়েন আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিমূল ইসলাম। বোমা বিস্ফোরণে তুলকালাম কাঁঠালিয়া অঞ্চল। পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েছে বলে অভিযোগ আইএসএফের। তৃণমূলের বক্তব্য, আইএসএফ পুলিশ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
আরও পড়ুন: Panchayat Result 2023 | তৃণমূলের বিজয় উল্লাসের মধ্যে বোমাবাজির অভিযোগ
ঘটনায় এক সাধারণ গ্রামবাসীরও মৃত্যু হযেছে বলে জানা গিয়েছে। তাঁর নাম রাজু মোল্লা। ভাঙড় ২ ব্লকে চিনেপুকুর এলাকার ঘটনা। পরিবারের দাবি, তিনি রাজনীতি করেন না। তাঁর পিঠে একটা গুলি লাগে বলে জানা গিয়েছে। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাঁকে মৃত বলে জানায়। বুধবার সকালে পুলিশের তরফে তাঁর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। মৃত্যু হয়েছে আইএসএফ কর্মী রেজাউল গাজির। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতী ও পুলিশ মিলে গুলি করেছে তাকে। ভোগালিতে উদ্ধার হয় রেজাউল গাজির দেহ। তাঁর দাদা জাইরুল গাজি বলেন, আমরা পাঁচ জন মিলে একটা আমবাগানে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেখান থেকে বাড়িতে ফোন করে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানাই। রেজাউল গাজি বলেন, বাড়িতে ২০০ পুলিশ এসেছিল। দেহ নিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু আমরা দিইনি। ভাইজানের নওশাদ সিদ্দিকীর অপেক্ষায় ছিলাম। ভাইজান তাঁর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। সেই মতো সব হচ্ছে। এছাড়া আইএসএফ কর্মী হাসানআলি মোল্লার গুলিতে মৃত্যু হয়েছে। ভাঙড় দুই ব্লকে কাঁটাডাঙা এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর মাথায় গুলি লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে জানায় ডাক্তার।