কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বিদ্যাসাগর ঝড়জলের রাতে দামোদর সাঁতরে মায়ের ডাকে বাড়ি ফিরেছিলেন। এ গল্প জানেন না, এমন বাঙালি নেই। তাও সে তো একদিনের জন্য। কিন্তু, রোজ নদী পেরিয়ে স্কুলে যেতে হয় খুদে খুদে পড়ুয়াদের। এমন চমকে দেওয়ার কাহিনি কি জানা আছে কারও? ঠিক তাই, এমনই অসম্ভবকে সম্ভব করে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে মহারাষ্ট্রের এক গ্রামের কচিকাঁচা পড়ুয়ারা। থুড়ি আত্মনির্ভর ভারতের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
জায়গাটার নাম নাসিক। গ্রামের নাম দেবলচা পাড়া। স্কুলের নাম শুক্লা বিদ্যালয়। সেখানে স্কুলে যাওয়ার পথে পড়ে দমন নদী। কিন্তু, সেই নদীর উপর নেই কোনও সেতু। সেতু তো দূরঅস্ত, একটি বাঁশের সাঁকোও কেউ এতদিনে তৈরি করে দেয়নি। অগত্যা একরত্তি বাচ্চাদের স্কুলের পোশাক পরেই সাঁতরে অথবা হেঁটে রোজ নদী পেরোতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর সরকার যখন প্রতিদিন যোগাভ্যাসের মতো বলে চলেছেন, ভারত এগিয়ে চলেছে। তখন এদেশেরই একটি গ্রামে শিক্ষার জন্য প্রাণান্তকর পরিশ্রম করতে হচ্ছে শিশু ছাত্রছাত্রীদের। শিক্ষা, বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, আত্মনির্ভর ভারত, স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের রাজনৈতিক ফষ্টিনষ্টির মধ্যেই এই বাস্তব চিত্রটি সরকারের নগ্ন রূপটি তুলে ধরেছে। একটি সেতু বা সাঁকোর অভাবে রোজ ছাত্রছাত্রীদের হয় সাঁতরে, নয়তো বাবার কাঁধে চড়ে পার হতে হয় নদী। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, এই জায়গায় নদী খুবই গভীর। তাই আমরা খুদে স্কুল পড়ুয়াদের কাঁধে চাপিয়ে নদীটা পার করিয়ে দিই। যদি তা হয়, বড় কড়াই জাতীয় কিছুতে বসিয়ে ওপারে পৌঁছে দিই। বহুবার প্রশাসনকে বলা সত্ত্বেও কাজের কাজ কিছু হয়নি।
আরও পড়ুন: Modi-Mamata Meeting: মোদি-মমতা বৈঠকের সম্ভাবনা আজ বিকেলেই
লক্ষ্মণ নামে আর এক স্থানীয় বললেন, পেঠ তালুকের এই গ্রামের বাচ্চাদের রোজ সাঁতরে স্কুল যেতে হয়। বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা নদীও প্রাণ হাতে করে পেরোতে হয়। বাবা-মারা বাচ্চাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও স্কুলে পড়তে পাঠাতে বাধ্য হন। বর্ষায় খুব বেশি বৃষ্টি হলে সুকি নদীর জল ছাড়লে, এই নদী আর পেরনোর অবস্থায় থাকে না। তখন দিনের পর দিন স্কুল কামাই করে ঘরবন্দি থাকতে হয় বাচ্চাদের।
এক অভিভাবক বললেন, বছরের পর বছর ধরে এই অবস্থাই চলছে। এখানে না আছে রাস্তা, না আছে সেতু। প্রতিবছর ভোটের সময় তাঁরা সেতু তৈরির দাবি জানালেও কোনও কাজ হয়নি।