আগামিকাল, দশেরার উৎসবে যোগ দিতে হিমাচল প্রদেশে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সমস্ত সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের চরিত্র শংসাপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল প্রশাসন। প্রবল বিতর্কের ঝড়ের মুখে সেই ফতোয়া প্রত্যাহার করে নিল পুলিশ।
প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য সবসময়ই একটি বিশেষ সিকিউরিটি পাস ইস্যু করা হয়। এবার সেই পাস পেতে হলে অন্যান্য পরিচয়পত্র, সংস্থার চিঠি ছাড়াও দিতে হবে সেই সাংবাদিকের চরিত্র শংসাপত্র। যে নির্দেশকাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক মহলে প্রবল উষ্মা দেখা দিয়েছিল। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, এ ধরনের ফতোয়া ছিল সাংবাদিকতার প্রতি অবমাননাকর।
আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মীরে ডিজি খুনের ঘটনায় গ্রেফতার পরিচারক, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ
দশেরার দিন প্রধানমন্ত্রী প্রথমে বিলাসপুর যাবেন। সেখানে একটি জনসভায় অংশ নেবেন। এরপর এআইআইএমএসের একটি ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করবেন। সবশেষে কুলুর বিখ্যাত দশেরা উৎসবে যোগ দেবেন মোদি। এই অনুষ্ঠানে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের বলা হয়েছিল, সিকিউরিটি পাসের জন্য অন্যান্য ডকুমেন্টের সঙ্গে একটি করে চরিত্র শংসাপত্র দিতে। সেটা আবার শুধুমাত্র বেসরকারি সংবাদ সংস্থাগুলির নয়, সরকারি যেমন আকাশবাণী ও দূরদর্শন সাংবাদিকদেরও চরিত্র শংসাপত্র দাখিল করতে বলা হয়েছিল।
জেলা প্রশাসনের এই ফতোয়া জারির পর থেকেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। শুধু জেলা প্রশাসনই নয়, পুলিশও গত ২৯ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে জেলা জনসংযোগ আধিকারিককে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন এমন সাংবাদিক-চিত্র সাংবাদিকদের নাম জানাতে বলা হয়। যার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কে ওই শংসাপত্রও থাকতে হবে। ১ অক্টোবরের মধ্যে বিলাসপুরের ডিএসপি, সিআইডি অফিস থেকে ওই শংসাপত্র সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নাম পাঠানো ব্যক্তিরা আদৌ সেখানে থাকার অনুমতি পাবেন কিনা তা ঠিক করবে সিআইডির ওই দফতর।
ইন্ডিয়া টুডে টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আম আদমি পার্টির মুখপাত্র পঙ্কজ পণ্ডিত বলেন, তাঁর ২২ বছরের সাংবাদিকতার জীবনে তিনি কখনও জিনিস চোখে দেখেননি। তাঁর মতে, এটা অত্যন্ত অপমানজনক এবং মোদির অনুষ্ঠানে সব সাংবাদিক যাতে ঢুকতে না পারেন, তার কৌশল। হিমাচল কংগ্রেসের মুখ্য মুখপাত্র নরেশ চৌহানও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, এটা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা। এ নিয়ে সংবাদ মহলও হাসাহাসি করে বলছে যে, সাংবাদিকদের ঢুকতে এত বাধানিষেধ জারি করলেও প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যে বিপুল পরিমাণ ভিড় বাড়াতে লোক নিয়ে আসা হবে, তাদের কোনও পরিচয়পত্রই দেখাতে হবে না।