তাইপেই, ০২ অগাস্ট: পরিণতি ভাল হবে না। আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের ‘পরিকল্পনা’ প্রকাশ্যে আসার পর ঠিক এই ভাষাতেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি চিন। কিন্তু, সব হুমকি অগ্রাহ্য করেই তাইওয়ান সফরে গেলেন ন্যান্সি পেলোসি। তাঁর নিরপত্তার অজুহাতে দক্ষিণ চিন সাগরের দ্বীপরাষ্ট্রে ঢুকে পড়ল আমেরিকার যুদ্ধবিমান-জাহাজ!
মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়া থেকে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন পেলোসি-সহ আমেরিকার কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সদস্যেরা। তাঁদের নিরাপত্তা দিতে জাপানের বিমানঘাঁটি থেকে ওড়ে আমেরিকার বিমানবাহিনীর ১৩টি ফাইটার জেটের একটি স্কোয়াড্রন। ১৯৯৭ সালের পরে এই প্রথম আমেরিকার কোনও শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিক তাইওয়ান সফরে। আর তা নিয়েই আপত্তি তুলেছে শি জিনপিং সরকার। চিনা বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ন মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য সমস্ত রকম পদক্ষেপ করব আমরা।’’ এক ধাপ এগিয়ে চিনা প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র ট্যান কেফেই তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁর ঘোষণা, ‘‘আমাদের সেনা কিন্তু চুপ করে বসে থাকবে না।’’
ক্রমশই ‘চিনের ইউক্রেন’ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে তাইওয়ানের। চিনা বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা দফতরের তরফে ধারাবাহিক ভাবে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের হুঁশিয়ারির মধ্যেই এ বার প্রত্যাঘাতের প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রয়াত চিয়াং কাইশেকের দেশ। আমেরিকার সংবাদ মাধ্যমের দাবি, চিন সাগরে ইতিমধ্যেই যুদ্ধের মহড়া শুরু করেছে তাইওয়ান নৌসেনা। সম্ভাব্য চিনা আগ্রাসন ঠেকাতে উপকূল বরাবর অবস্থান নিচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রের স্থলসেনা। শুরু হয়েছে আকাশপথে চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-কে ঠেকানোর প্রস্তুতিও! এর পাশাপাশি, তাইওয়ানের সক্ষম নাগরিকদের একাংশকে যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়াও শুরু করেছে সে দেশের সেনা। এই পরিস্থিতিতে পেলোসির তাইওয়ান সফর কূটনৈতিক দিক থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।