Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar: ইউ পি মে কা বা? 
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  কৃশানু ঘোষ
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ১০:৩০:০০ পিএম
  • / ১৫১ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • কৃশানু ঘোষ

বাঘ বা সিংহকে কখনও, জীবনে কখনও ভয় দেখাতে দেখেছেন? আপনার সামনে এসে হালুম করে ডাক পাড়বে, ওরা খিদে পেলে চিৎকার করে, রেগে গেলে যুদ্ধ করে, শিকার দেখলে ঝাঁপিয়ে পড়ে কিন্তু ভয় দেখায় না। যারা ভয় দেখায় তাদের মাও সে তুং বলেছিলেন কাগুজে বাঘ, পেপার টাইগার। এমন শত লক্ষ কাগুজে বাঘ ইতিহাসের আঁস্তাকুড়েতে পড়ে আছে, নখদন্তহীন প্রায় অন্ধ, বিছানায় শয্যাশায়ী এমন কাগুজে বাঘদের আমরা চিনি জানি, নাম করে লজ্জা দেব না। যারা এক কথায় চাকরি কেড়ে নিয়েছিল, এক কথায় জেলে পুরেছিল, মাথা ভেঙে দেবার হুমকি দিয়েছিল, লাইফ হেল করে দেবার ধমকি দিয়েছিল। যে হিটলার জার্মান লেবেনস্রাম-এর কথা বলেছিল, জার্মানবাসীদের লিভিং স্পেস এর জন্য লক্ষ লক্ষ ইহুদিকে হত্যা করেছিল, তারা কোথায়? কেউ আত্মহত্যা করেছে, কাউকে মানুষ খুন করে উল্টো করে ঝুলিয়েছিল, কেউ বিছানায়, কেউ পুড়ে ছাই। কিন্তু তবুও শাসকরা ভয় দেখায়, আর্কিমিদিস আঁক কষছেন, সম্রাটের প্রতিনিধি এসেছে, গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে, সঙ্গে সেপাই লস্কর, সম্রাটের সেই প্রতিনিধি জিজ্ঞেস করেছিল, আপনার কি কিছু বলার আছে, আর্কিমিদিস বলেছিলেন, একটু সরে দাঁড়ান, আপনার শরীর আলো আসতে দিচ্ছে না, দেখছেন না আমি আঁক কষছি? সম্রাটের প্রতিনিধি ঘর ছেড়ে সিপাই সান্ত্রী নিয়ে মানে মানে কেটে পড়েছিলেন, কারণ? কারণ ভয় যারা দেখায় তারা আসলে পেপার টাইগার, কাগুজে বাঘ। 

আমাদের দেশের মাথায়, গাছের ডালে আপাতত এই শাখামৃগ মানে বাঁদরেরা বসে আছে, যাদের মুখ খ্যাচানি আমাদের রোজ শুনতে হচ্ছে। আজ সেই শাখামৃগদের মানে বাঁদরের মুখ খ্যাচানি নিয়েই কিছু কথা। দেশের বিরোধী দল তাদের বৈঠকে বসবে, আরও খোলসা করেই বলি কংগ্রেস দলের অধিবেশন ছত্তিশগড়ে। হতেই পারে, তো সেখানে বসে তো তাঁরা বোমা বানানোর পরিকল্পনা করছেন না, এ কে ফর্টি সেভেন নিয়ে মাঠে নামার ষড়যন্ত্রও করছেন না, তাঁরা আগামী রাজ্য নির্বাচনগুলোতে কী করবেন, কোন ইস্যু তুলে ধরবেন তাই নিয়ে আলোচনা। বিজেপি কংগ্রেসমুক্ত ভারত চায়, কংগ্রেস বিজেপির হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিতে চায়, অবাধ গণতন্ত্রে খুব স্বাভাবিক ঘটনা, কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে অধিবেশনের আগেই ছত্তিশগড়ে ১২টা জায়গায় ভিজিলেন্স রেড করানো হল, যেখানে সেই টিম গেল তারা কেউ কেউ কংগ্রেসি নেতা, কেউ বা কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী। ছত্তিশগড়ে আজই যাচ্ছিলেন পবন খেরা সমেত কিছু কংগ্রেস নেতা, সেখানে পুলিশ চলে গেল পবন খেরাকে গ্রেফতার করা হল। মামলা কোথায়? মামলা আসামের। কোনও লুকোছাপাও নেই, নির্লজ্জভাবে পুলিশ প্রশাসন ভিজিলেন্সকে ব্যবহার করছে এই মোদি সরকার। এবং পুরোটাই ভয় দেখানোর জন্য, আপনি মাথা নুইয়ে কাঁথির খোকাবাবু বা জল শোভন হয়ে যান, ভিজিলেন্স আপনার দরজায় পাও মাড়াবে না। একজন সাংবাদিক, সংবাদ সংগ্রহের জন্য হাথরস যাচ্ছেন, কী হয়েছে সেখানে? এক দলিত মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে, অত্যাচার করা হয়েছে, তিনি মারা গেছেন, প্রশাসন তাঁর ডেডবডি নিয়ে মাঝরাতে ধানজমিতে পুড়িয়ে দিয়েছে। সেই সাংবাদিক সিদ্দিকি কাপ্পান ওই ধর্ষিতা মেয়েটির বাড়িতে যেতে চান, কথা বলে খবর করতে চান। মাঝরাস্তায় সিদ্দিকি কাপ্পানকে আটক করা হল, ৫ অক্টোবর ২০২০ গ্রেফতার করা হল এবং ইউএপিএ, আনলফুল অ্যাকটিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট-এ গ্রেফতার করা হল, দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হল এবং ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ মানে, দু বছর কেটে যাবার পরে তিনি বেল পেলেন। তিনি বাইরে বেরিয়ে এসে জানালেন, আমার ওপর অত্যাচার করা হয়েছে। জেএনইউ-র স্কলার, উমর খালিদ সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন সিএএ, এনআরসি ইস্যুতে সোচ্চার হয়েছিলেন, আজও জেলে, কোন অভিযোগ তার বিরুদ্ধে নেই? আগুন লাগানো, দাঙ্গার প্ল্যান করা, দেশদ্রোহিতা থেকে যা যা সম্ভব প্রত্যেকটা ধারায় তিনি অভিযুক্ত এবং ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০তে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও জামিনও পাননি, একটা অভিযোগ প্রমাণিত নয়, কিন্তু জেল খাটা হয়ে গেল দু বছরেরও বেশি। কেন? ওই যে ভয় দেখানো, মোদি সরকার সিদ্দিকি কাপ্পানকে জেলে পুরে বাকি সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে চায়, উমর খালিদকে গ্রেফতার করে বিরোধিতার সামান্যতম আওয়াজ যারা তোলে তাদের ভয় দেখাতে চায়। 

আরও পড়ুন: Fourth Pillar: দেশদ্রোহী সাভারকর, ভারতরত্ন সাভারকর  

এবার সেই খেলায় নতুন চরিত্র। নেহা সিং রাঠোর। ইনি ভোজপুরি ভাষায় লোকগীতির আঙ্গিকে গান করেন, কবিতা বলেন, নিজেই লেখেন, নিজেই রেকর্ড করেন, নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দিয়ে দেন। গত ইউপি নির্বাচনের সময় ‘ইউপি মে কা বা’ বলে একটা গান গেয়েছিলেন, শুনুন। (প্রথম গান) কী বলেছেন? হাথরসের বেটির কথা বলেছেন, বেকার ছেলেমেয়েদের কথা বলেছেন, জিজ্ঞেস করেছেন ৫ বছর তো হল, যোগীজি আপনি কী করেছেন। নির্বাচনে ব্যস্ত যোগীজি তখন কিছুই করেননি, দ্বিতীয় বার জিতে এসে আপাতত যোগীর অস্ত্র বুলডোজার, এবং এর মধ্যে নেহা সিং রাঠোর আরও অনেক গান গেয়েছেন, কিন্তু আবার ইউ পি মে কা বা গাইলেন, এটা দ্বিতীয় ভাগ। (গান) গান গেয়েছেন, খুন করেননি, গানে কোনও অশ্লীল শব্দ নেই, এমন কিছুই নেই যা অসামাজিক, কিন্তু ওনার ঘরে গতকাল পুলিশ গিয়েছিল, নোটিশ জারি করতে, জানাতে যে ওনার গানের ফলে নাকি সামাজিক সমস্যা দেখা দেবে, মানুষে মানুষে বিভেদ বাড়বে তাই ওনার কাছ থেকে জানতে চাওয়া হচ্ছে তিনিই কি এই গান লিখেছেন? তিনিই কি গেয়েছেন? আবার সেই বাঁদরের দাঁত খ্যাচানো। আসলে ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে, এক যুবতী, নিজের একটা ইউটিউব চ্যানেলে কিছু গান আপলোড করে, সেটাও যোগী সরকারের না পসন্দ, একটা সামান্য বিরোধিতার স্বরও তারা মেনে নিতে পারে না। দলবল নিয়ে পুলিশ এসেছে, নোটিস ধরিয়েছে, একটা বাচ্চা মেয়ের সামান্য গানেও তারা ভয় পায়। আর যাকে ভয় দেখাচ্ছে সে কী বলছে? আজ আমরা নেহাকে প্রশ্ন করেছিলাম, জিজ্ঞেস করেছি, তাহলে কি তুমি ভয় পেয়েছ? তুমি কি তাহলে তোমার গান ডিলিট করে দেবে? নেহা জানাল সে সংবিধান নিয়ে বসে আছে, সংবিধানের অধিকার নিয়েই সে তার ফ্রিডম অফ স্পিচ-এর অধিকারকে ব্যবহার করতে চায়। শুনুন তার কথা। (বাইট) এইটাই হল সমস্যা। মোদি সরকার, পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের স্বৈরশাসক ভুলেই যায় যে পৃথিবীতে শিরদাঁড়াওলা মানুষজনও আছে, সবাই কাঁথির টাচ মি নট খোকাবাবু নন। কিন্তু আমরা এও জানি যে এক্কেবারে নির্মম পতনের আগে পর্যন্ত মোদি সরকার ভয় দেখাতেই থাকবে, আর আমাদের মনে রাখতেই হবে ঠাকুরের গান, দু বেলা মরার আগে মরব না ভাই মরব না, আমি ভয় করব না ভয় করব না। তাই নেহা যা হিন্দিতে বলেছে সেটাই বাংলায় আপনাদের বলার চেষ্টা করছি, একটা মশাল নেভানোর চেষ্টা হলে হাজার মশাল জ্বলে উঠবে এটা বুঝুক যোগী–মোদি সরকার। 

আরে হচ্ছেটা কী? ¬¬¬ 
আরে হচ্ছেটা কী?
যোগীর সরকার ভাঙছে বাড়ি
বুলডোজারের হুকুম জারি
মা বেটিকে জ্যান্ত পুড়িয়ে হিটলারগিরি হিটলারগিরি
হচ্ছেটা কী
আরে হচ্ছেটা কী
যোগীবাবার ডিএম যেন পাড়ার রংবাজ
কানপুরে হাত ধুয়ে আসছে রামরাজ
বলেছিল করবে যোগী মানুষেরই কাজ
কিন্তু দেখুন যোগীর ভরসা বুলডোজারই আজ
হচ্ছেটা কী?
আরে হচ্ছেটা কী?
শাসন করছে আমলা দামলা
ইচ্ছে মতোন হল্লা গুল্লা
তাদের মর্জি সামলা সামলা
বিরোধিতায় ঠুকছে মামলা
হচ্ছেটা কী?
হচ্ছেটা কী?
বাচ্চাগুলোর স্কুলে তালা
হাসপাতালে রোগী মরছে
তৈরি হচ্ছে গোশালা
গণতন্ত্রের কথা বললে 
গায়ে চুলকানির জ্বালা?
হচ্ছেটা কী? 
আরে হচ্ছেটা কী?
আগুন লাগলে হিন্দু মরবে
মরবে মুসলমান
যোগীবাবার চোখে কেবল
আবদুল্লার মকান
আবদুল্লা জ্বললে উনি খুশি
ওনার সেটাই ইচ্ছে
সাকরেদরা সেই আগুন ছড়াতে
যা ইচ্ছে তাই করছে 
আরে হচ্ছেটা কী? 
আরে হচ্ছেটা কী?

 

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০ ১১১২ ১৩ ১৪
১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১
২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭ ২৮
২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫
সুনীধির সুরমত্ত ইডেনে শুরু হল বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগ
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
দলবিরোধী কার্যকলাপ, ৬ বছরের জন্য বহিষ্কৃত কংগ্রেস নেতা
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
এসির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে মোদি সরকার, আসছে নয়া নির্দেশিকা
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
সাদা-কালো ড্রেসে মৌনি, চোখ জুড়িয়ে যাওয়া সৌন্দর্য
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
পানিহাটির তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার অভিযুক্ত আরিয়ান
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
২ গোষ্ঠীর সংঘর্ষে রণক্ষেত্র মহেশতলা, বাইকে আগুন, আক্রান্ত পুলিশ
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
বড় বদল ভারতীয় রেলে
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
আটাত্তরের জন্মদিনে ৭৮ কেজির লাড্ডু কাটলেন লালুপ্রসাদ
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
ইম্পিচমেন্ট প্রসঙ্গে কী বললেন প্রধান বিচারপতি গাভাই?
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে ‘অনুতপ্ত’ মাস্ক! প্রকাশ্যে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
রেল যাত্রীদের জন্য সুখবর! রিজার্ভেশন নিয়ে বড় ঘোষণা করল রেল
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের আগে বাধ্যতামূলক কোভিড টেস্ট!
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
পরিস্থিতি হাতের বাইরে, সেনা পাঠিয়েও হচ্ছে না নিয়ন্ত্রণ, এবার কী করবেন ট্রাম্প? 
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের বিরোধিতা করল সিবিআই
বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team