কোচবিহার: লোকসভা ভোটে (Lok Sabha Vote) উত্তরবঙ্গে হোঁচট খেযে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটেও ফল খুব একটা সন্তোষজনক নয়। বিধানসভায় শীতলকুচি ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election 2023) বাংলার ভোট ধরে রাখতে বিজেপির গড় কোচবিহার (Cooch Behar) দিয়েই সোমার থেকে নির্বাচনী প্রচারের ময়দানে নেমেছে খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চান্দামারি সভামঞ্চ থেকেই মোদিকে নিশানা করে মমতা বলেন, একজন কোটি কোটি টাকা করে রাশিয়া-আমেরিকায় (Russia USA) যাচ্ছেন। অথচ রাজ্যের ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছে। বারবার চাওয়ার পরও টাকা দিচ্ছে না। একশ দিনের কাজে ৭ হাজার কোটি পাওনা টাকা দেয়নি কেন্দ্র। পঞ্চায়েতে জিতে সেই টাকা আদায় করে ছাড়বে তৃণমূল।
পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের একের পর এক দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে প্রচারের ময়দানে নেমেছে বিরোধীরা। জেলায় জেলায় আবাস যোজনা, গ্রামীণ সড়ক যোজনা, একশো দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল এসেছে রাজ্যে। এরপরও রাজ্যের একাধিক টাকা আটকে রেখে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে শাসকদল। ঠিকমতো হিসেব না দেওয়ার অভিযোগে এই সব প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে রেখেছে বিজেপি সরকার। এদিন মমতা মোদির বিদেশ সফরকে খোঁচা দিয়ে বলেন, আমেরিকাকে সন্তুষ্ট করছে। আর আমেরিকায় গিয়ে সরকারের টাকা নষ্ট করছে। মোদিবাবু নেতা হবেন, কখনও রাশিয়ায় যাচ্ছেন। রাশিয়া, ফ্রান্সে গিয়ে প্লেন কিনছেন। আর আমার গরীব ঘরের ভাই-বোনেরা একশো দিনের কাজের টাকা পাচ্ছে না। এই হচ্ছে বিজেপির ডাবল ইঞ্জিন সরকার।
শুধু মমতা নয় কেন্দ্রের টাকা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সরব হতে দেখা গিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা পাওনা টাকার দাবিতে দিল্লিতে ধরনা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। সম্প্রতি জনসংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে অভিষেক জানান, পঞ্চায়েত ভোট শেষ হলে দশ লক্ষ লোক নিয়ে গিয়ে দিল্লি থেকে প্রাপ্য টাকা আদায় করে আনা হবে।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারকে দিল্লি থেকে উৎখাত করার ডাক দিয়ে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। সম্প্রতি পাটনার সেই বৈঠকে বরোধীজোট নিয়ে আলোচনায় বসেছিল তাবড় তাবড় বিরোধী দলের নেতা মন্ত্রীরা। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতাও। কিন্তু, সোমবার পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে কোচবিহারে তিনি বলেন, সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপিকে বিদায় দিন। কিন্তু এটাও পরিষ্কার করে দেন রাজ্যের নির্বাচনে তিনি কোনও দলকেই জমি ছাড়তে নারাজ। দিল্লিতে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে মহাজোটের সঙ্গেই তিনি রয়েছেন। মহাজোটই হবে দিল্লিতে। আর বাংলারটা আমরা দেখব। সেই মতোই এদিনের সভায় মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ঝাঁঝালো আক্রমণ শানান।